দলের যৌথসভায় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ॥ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দলকে টিকিয়ে রেখেছেন

19
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথ সভায় বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক অত্যাচারেও আওয়ামী লীগকে থামানো যায়নি। বহু ত্যাগের বিনিময়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দলকে টিকিয়ে রেখেছেন। সব বাধা পেরিয়ে এসে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এখন একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আর একটা সরকার সফলভাবে কাজ করতে পারবে তখনই যখন তার পেছনে দল সুসংগঠিত থাকে। কারণ সুসংগঠিত দল হচ্ছে একটা সরকারের জন্য বিরাট শক্তি। এই শক্তিটাই সব থেকে বেশি কাজে লাগে। যে কারণে সকল সংগঠনের ওপর আমরা সবথেকে গুরুত্ব দেই।
শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথসভায় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে আমাদের একটাই প্রতিজ্ঞা হবে, আমরা নবনির্বাচিত কমিটি নবোদ্যমে জাতির পিতার দেয়া স্বাধীনতাকে আরও অর্থবহ করে দেশকে আরও উন্নত করব। বাংলাদেশের মানুষ যেন বিশ্বে এখন যে মর্যাদা পেয়েছে, এর থেকে আরও বেশি মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। তাই ২০২০ সালটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কথা স্মরণ করেন। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই যৌথ সভা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়। কিছুক্ষণ চলার পর সভা আজ শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় পর্যন্ত মূলতবি করা হয়। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানান, এ মূলতবি সভা শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।
বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই (সুসংগঠিত) শক্তিটাই সবথেকে বেশি কাজে লাগে একটা দেশকে উন্নত করতে। যেটা আমি নিজে উপলব্ধি করি। সে কারণে আমি সবসময় সংগঠনের ওপর সবথেকে গুরুত্ব দিই। এত বড় একটা দলের দায়িত্বভার নেব, সেটা কখনও মাথায় চিন্তাও ছিল না, করিও নাই। তাছাড়া যেহেতু আব্বা (বঙ্গবন্ধু) রাজনীতি করেন, আমরা সব সময় ছিলাম সক্রিয়। একেকটা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছি। কখনও এই আশা বা এই চিন্তাও মাথায় আসেনি যে কোন কিছু হতে হবে, পেতে হবে, বা কিছু করতে হবে। সেটা ছিল না। কাজ করতে হবে এটুকু জানতাম।
আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমে দলকে সুসংগঠিত করার কাজে হাত দিয়েছিলেন জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। নিজেদের জীবন পণ করেই তারা এ সংগঠনকে ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, এ দেশে রাজনীতি কেউ যদি শিখিয়ে থাকে, সেটা আওয়ামী লীগই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে করে যাচ্ছে। এই ঐতিহ্যটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে এটা মনে রাখতে হবে, ২০২০ সাল বাংলাদেশের জন্য সবথেকে একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়। সেটা হচ্ছে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী। ১৯২০ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং যার জন্ম না হলে এই বাংলাদেশ কোনদিন স্বাধীন হতো না। এটাই হলো বাস্তবতা। মনে হয় যেন, তাঁর জন্মটাই হয়েছিল বাঙালি জাতিকে জাতি হিসাবে একটা আত্মপরিচয় দেয়া, একটা মর্যাদা দেয়া এবং একটা স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলা। সেই কারণে আমাদের জন্য এই সালটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটকে সরকার গঠনের সুযোগ দেয়ার জন্য জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণ আমাদের ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোটে নির্বাচিত করেছে। আমরা সরকারে আসতে পেরেছি। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে ২০২০ সাল জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন করার সুযোগ পেয়েছি। পাশাপাশি ২০২১ সাল; আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। আমাদের সৌভাগ্য হলো যে আমরা ১৯৯৭ সালে আমাদের স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী সেটাও কিন্তু আমরা উদ্যাপন করতে পেরেছিলাম। তখনও আওয়ামী লীগ সরকারে ছিল। আবার সুবর্ণজয়ন্তীটাও উদ্যাপন করার সুযোগ পেয়েছি। সেই জন্য আমরা জাতির কাছে কৃতজ্ঞ। আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, দেশের জনগণের এই আস্থা-বিশ্বাস না থাকলে আমরা এই সুযোগটা রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করার সুযোগটা পেতাম না। জানি না তখন কি হতো! কারণ এই নামটা (বঙ্গবন্ধু) তো মুছে ফেলার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। কাজেই সেটা আমরা করতে পারব, সেটাই আমাদের সবথেকে বড় শক্তি। আমাদের এখন সেভাবে কাজ করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা কমিটি করেছি। আমরা বিভিন্ন প্রোগাম নিয়েছি। সেই প্রোগ্রামগুলো একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ইতিহাস আর বাংলাদেশের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালে মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে সংগঠনকে সুসংগঠিত করার জন্য দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, দায়িত্বভার নিয়ে তিনি দলকে সুসংগঠিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সাধারণত মানুষ দল ছেড়ে দেয় মন্ত্রিত্বের লোভে। আর জাতি পিতা মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য। কারণ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানি এই আওয়ামী লীগ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং আরেকটি দল গঠন করেছিলেন। তখন খুব প্রয়োজন ছিল দলকে আরও সুসংগঠিত করা। জাতির পিতা সেটাই করেছিলেন।
শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় করতে গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগকে ‘শেষ করে দেয়া’, যেন এ সংগঠন আর রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নিতে না পারে।’ ৭৫-এর পর আমরা দেখেছি বাংলাদেশে ১৯টা ক্যু হয়েছে। একেকটা ক্যু’র পর সামরিক বাহিনীর হাজার হাজার কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের কারাগারে রাখা হয়েছে এবং এখনও অনেকের শরীরে সেই অত্যাচারের চিহ্ন রয়েছে। কত মানুষকে গুম খুন করেছে এই অত্যাচার নির্যাতনের মধ্য দিয়েও কিন্তু আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে পারেনি।
অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার আগে দলের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালানো হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন আমরা সরকারে এসে জনগণের জন্য কাজ শুরু করলাম, তার শুভফল জনগণ পেতে শুরু করল। কিন্তু তার পূর্বে আওয়ামী লীগের নামে নানা অপবাদ ছড়ানো হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশ বেঁচে দেবে! কেউ কেউ বলেছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মসজিদে উলুধ্বনি শোনা যাবে। নানা ধরনের অপপ্রচার তখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তখন ছাড়ানো হতো।
আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, তখন ওইভাবে প্রতিবাদ করা যায়নি। তখন একটামাত্র টেলিভিশন। সব সরকারী প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা থেকে বিভিন্ন জায়গায় এই অপপ্রচারগুলো এমনভাবে প্রচার করা হতো, আমাদের তখন সেটাকে মোকাবেলা করা একটা কঠিন কাজ ছিল। তারপরও আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী তারা এই প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বারবার বাজানো, ইতিহাস তুলে ধরা, জয়বাংলা স্লোগানটাকে ধরে রাখা থেকে শুরু করে ইতিহাস বিকৃতির মধ্যে সঠিক ইতিহাস সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছে।
তৃণমূল পর্যায় থেকে নেতাকর্মীরা অনেক ত্যাগের বিনিময়ে এই সংগঠনটা ধরে রেখেছে। এটা করতে গিয়ে বহু পরিবার একেবারে নিঃশেষ হয়ে গেছে, কত যে নির্যাতনের ইতিহাস, সেটা হয়তো হিসাব করে বলা যাবে না।
২০০৯ সালে আবার সরকারে আসার পর ১১ বছর পূর্ণ হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন অন্তত এইটুকু বলতে পারি, মানুষের যে আস্থা-বিশ্বাস, সমর্থন আমরা পেয়েছি, আজকে বাংলাদেশের মানুষ জানে, একমাত্র আওয়ামী লীগ থাকলে উন্নয়ন হয়, সেটা আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় যারা বলেছিল- ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে কী হবে, ‘বটমলেস বাস্কেট’ হবে, আজকে তারা সে কথা বলতে পারবে না। বরং আজকে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে, যেটা মূলত আমার লক্ষ্য ছিল।
বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর প্রায় ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরা এবং নেতাকর্মী ও জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন পাওয়ার কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফিরে এসে শুনেছি ‘আওয়ামী লীগ নেতারা স্মার্ট না, মডার্ন না। আওয়ামী লীগ আধুনিক না। আওয়ামী লীগ এটা না, সেটা না, আওয়ামী লীগ এটা পারবে না। আওয়ামী লীগে শিক্ষিত লোক নেই, ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক কথা শুনতে হত তখন। অনেক অপবাদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দেয়া হতো।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা নিজেদের স্মার্ট বলে ক্ষমতায় এসেছে, তারা ক্ষমতায় আসত শুধু লুটপাট করতে, মানি লন্ডারিং করতে, দুর্নীতি করতে, তাদের স্মার্টনেসটা ছিল নিজেদের অর্থনৈতিক শক্তিকে বাড়ানো, নিজেদের তৈরি করা। কিন্তু দেশের মানুষ কিন্তু এই স্মার্টদের কাছ থেকে কিছু পায় নাই। বরং স্মার্টনেস দেখাতে পেরেছে আওয়ামী লীগ। যখন ক্ষমতায় এসেছে তখন দেখিয়েছে যে রাষ্ট্র পরিচালনা আওয়ামী লীগই পারে, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন- সেটা আওয়ামী লীগই পারে। ১৯৭৫ সালের পর যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছে, তারা ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করত না’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এখানে আমাদের উদ্দেশ্যটা কী? যেহেতু ২৪ বছরের সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা, এই স্বাধীনতা কখনও ব্যর্থ হতে পারে না, সেটা প্রমাণ করা। সেটা আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি। এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।
ব্যাপকভাবে মুজিববর্ষ উদযাপন প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ১০ জানুয়ারি জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস থেকে আমরা কাউন্টডাউন শুরু করে ১৭ই মার্চ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন শুরু করব। বছরব্যাপী সারাদেশে অনুষ্ঠান করব।
‘মুজিব বর্ষ’কে সামনে রেখে নবোদ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা উলেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা আবার নবোদ্যমে জাতির পিতার দেয়া এই বাংলাদেশকে আরও উন্নত করব, স্বাধীনতাকে আমরা আরও অর্থবহ করব, যেন বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বে যেন মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে। এখন যে মর্যাদা পেয়েছে এর চেয়ে আরও বেশি মর্যাদা নিয়ে আরও উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেন গড়ে উঠতে পারে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাব।
দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের তিন বছর মেয়াদী কমিটি করেছি। কারণ এখন লোক সংখ্যা বেড়েছে। আমাদের জেলা বেড়ে গেছে। আমাদের কার্যপরিধি বেড়ে গেছে। আমরা এখনও সব জেলার সম্মেলন করতে পারিনি। অনেক জায়গায় আমরা সময় দিয়ে আবার স্থগিত করতে হয়েছে। কারণ ডিসেম্বর মাস আমাদের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী থাকে, দলীয় কর্মসূচী থাকে, সবকিছু মিলিয়ে আমাদের সময় ছিল না। তাই এখন পরিকল্পনা নিয়ে যেসকল জেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি আছে, সেগুলোর কাউন্সিল করে শক্তিশালী সংগঠন হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।
২১তম জাতীয় সম্মেলনে সফলভাবে সম্পন্ন করার প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এটা আমাদের আওয়ামী লীগ অফিস। আমরা অত্যাধুনিক এই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিল্ডিংটাও তৈরি করেছি। কাজেই আমি চেয়েছি যে, আমাদের প্রথম সভা আমরা আমাদের নিজের অফিসেই শুরু করব। এখানে আমরা করতে পারি। তবে এখানে সমস্যা হলো যে, বিভিন্ন অফিস, তারপর অনেক হকাররা থাকে। বিভিন্ন জীবন-জীবিকার লোক থাকে। আমি আসলে পরে সিকিউরিটির কারণে তাদের এই জীবন-জীবিকা ব্যাহত হয়। সেজন্য শুক্রবার আমরা এখানে শুরু করে দিচ্ছি। পরবর্তীতে আবার মূলতবি করে আরেকটা তারিখ ও সময়টা ঠিক করে সভাটা করব। কিন্তু আমার ইচ্ছা ছিল যে, আমরা প্রথম সভাটা আমাদের অফিসে করি। এই জন্য শুক্রবার যেহেতু ছুটির দিন সেজন্য এটা আমরা বেছে নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে যৌথসভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের অধিকাংশ নবনির্বাচিত নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শুরুতেই শোক প্রস্তাব উত্থাপন এবং তা গৃহীত করা হয়। এছাড়া বৈঠকে দেশব্যাপী সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবে ব্যাপকভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী মুজিববর্ষ পালন নানা কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা হয় এবং তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।