কাজিরবাজার ডেস্ক :
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে চায় বিএনপি। এ জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ‘অঙ্গীকার’ করেছেন দলটির নীতিনির্ধারণী নেতারা। রবিবার (২৪ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তারা এই ‘অঙ্গীকার’ করেন।
বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ কমিটির সেক্রেটারি কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তারা বর্তমান সরকারের সমালোচনা করেন। এ সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন বিষয়েও তারা আলোচনা করেন।
বিএনপির দায়িত্বশীলরা জানান, সমাবেশের অনুমতি পেতে দেরি হওয়ায় একটি পিকআপ ভ্যানে অস্থায়ী মঞ্চ করা হয়।
সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের একটি লক্ষ্য। তা হলো খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য একটি গণঅভ্যুত্থান গড়ে তোলা। বেআইনিভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে ২০ মাস ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ একই সময়ে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে যেসব মামলা হয়েছিল, তা তুলে নেওয়া হয়েছে। আর খালেদা জিয়ার নামে থাকা ৪টি মামলার জায়াগায় এখন হয়েছে ৩৫টি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কোনও বিভক্তি নয়, ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে আন্দোলনে নামতে হবে। দ্রুত জনগণকে সংগঠিত করে রাজপথে আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো।’
বর্তমানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ঐক্যের উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘সমস্ত মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দুর্বার গণআন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে উৎখাত করতে হবে। আজকে সবাইকে অন্য কোনও স্লোগান না দিয়ে, ‘এই সরকার নিপাত যাক’ স্লোগান দিতে হবে।’’
‘আর সমাবেশের অনুমতি নেবে না বিএনপি’
রবিবারের সমাবেশের জন্য সকাল ১০টায় অনুমতি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এরপর আমরা আর কোনও অনুমতি নেবো না। যখন প্রয়োজন হবে তখন সভা-সমাবেশ, মিটিং, মিছিল করবো। রাজপথে নামবো। এগুলো করা আমরা শাসনতান্ত্রিক অধিকার। সংবিধানিক অধিকার হচ্ছে আমি আমার প্রতিবাদ করতে পারবো।’
উল্লেখ্য, রবিবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে বিআরটিসির মতিঝিল (কমলাপুর) ডিপোতে একটি অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, বিএনপিকে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই নির্বাচন বাতিল করুন। নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন করুন। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন, এডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ।