স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমার রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় মাছ বিক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি রায়ে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেট জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: শরীফ উদ্দীন এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে, গোলাপগঞ্জ থানার কোতয়ালপুর গ্রামের শেখ খলিল মিয়ার পুত্র শেখ মনির উরফে কালা মনির (২৪), হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার ছড়িপুর গ্রামের মৃত কাচা মিয়ার পুত্র বর্তমানে নগরীর কদমতলী বালুর মাঠ এলাকার বাসিন্দা বাবুল মিয়া উরফে বাবু উরফে টুকাই বাবুল (২৫), কুমিল্লার লাকসাম থানার ছাতারপাইয়া গ্রামের হাসেম মিয়ার পুত্র বর্তমানে খোজারখলা টেকনিক্যাল কলেজের পিছনের বাসিন্দা মো: রুবেল মিয়া উরফে টুকাই রুবেল (২২) এবং কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার কান্দলা এলাকার পশ্চিমপাড়ার বর্তমানে রেলওয়ে স্টেশন এলাকার বাসিন্দা মৃত মাতব্বর আলীর পুত্র মো: নাজিমুল ইসলাম উরফে রাজু (২০)। রায় ঘোষনার সময় সকল আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামী মো: নাজিমুল ইসলাম উরফে রাজু পলাতক ছিলো।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, হবিগঞ্জ সদর থানার উমেদপুর গ্রামের মৃত রইছ উল্লার পুত্র বর্তমানে দক্ষিণ সুরমা রায়েরগ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক (৪৮) সিলেট শহরের বিভিন্নস্থানে ফেরি করে মাছ বিক্রি করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় তিনি সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের লিংক রোডের রেলওয়ে সিগন্যাল লাইটের দক্ষিণ পাশে রাস্তার উপর পৌঁছামাত্র দুষ্কৃতিকারীরা তার উপর হামলা চালায়। এ সময় তাকে অস্ত্র দিয়ে পেটে আঘাত করে আব্দুর রাজ্জাককে খুন করে দুষ্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো: সুজন মিয়া বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-১১ (১৬-১১-১৬)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে দক্ষিণ সুরমা থানার এসআই রিপন দাস ৪ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই থেকে আদালত এ মামলার বিচারকায্য শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ২২ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী শেখ মনির উরফে কালা মনির, বাবুল মিয়া উরফে বাবু উরফে টুকাই বাবুল, মো: রুবেল মিয়া উরফে টুকাই রুবেল ও মো: নাজিমুল ইসলাম উরফে রাজুকে ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদেরকে উল্লেখিত রায় প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি এডভোকেট নওসাদ আহমদ চৌধুরী ও স্টেট ডিফেন্স এডভোকেট গোলাম রব্বানী তালুকদার এবং আসামীপক্ষে এডভোকেট শাহ আলম মহিউদ্দিন ও এডভোকেট আব্দুস শোহেব আহমদ মামলাটি পরিচালনা করেন।