ইনিংস ব্যবধানে হেরে টেস্ট বিশ্বকাপ শুরু টাইগারদের

9
Mushfiqur Rahim (wk) of Bangladesh bats during day three of the the 1st Test match between India and Bangladesh held at the Holkar Cricket Stadium, Indore on the 16th November 2019. Photo by Deepak Malik / Sportzpics for BCCI

ক্রীড়াঙ্গন রিপোর্ট :
ইনিংস ও ১৩০ রানে হেরে আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করল বাংলাদেশ। ইন্দোরে ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে এমন লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করেছে মুমিনুল হকের দল। বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচটি শেষ হয়েছে মাত্র তিনদিনে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। কলকাতার ইডেন গার্ডেনে সিরিজের দ্বিতীয় তথা শেষ টেস্ট ম্যাচটি শুরু হবে ২২ নভেম্বর।
বৃহস্পতিবার ম্যাচের প্রথম দিন টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫০ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। ওইদিনই বিকালে ভারত ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটে ৮৬ রান সংগ্রহ করে দিনের খেলা শেষ করেছিল। পরে শুক্রবার পুরো দিন ব্যাট করে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় দিন শেষে বিরাট কোহলিদের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ৪৯৩ রান।
শনিবার ম্যাচের তৃতীয় দিন ভারত আর ব্যাট করেনি। তারা ইনিংস ঘোষণা করে দেয়ায় বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে নামে। প্রথম ইনিংস শেষে ৩৪৩ রানের লিডে ছিল ভারত। এই রান সামনে রেখে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে ২১৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছে। টাইগাররা খেলতে পেরেছে ৬৯.২ ওভার।
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও শুরুতে ভারতের পেসারদের তোপের মুখে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। দলীয় ১৬ রানের মধ্যেই ফিরে যান দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলাম। প্রথমে উমেশের বলে বোল্ড হন উমরুল। এরপর ইশান্তর বলে বোল্ড হন সাদমান ইসলাম।
ওয়ানডাউনে নেমে অধিনায়ক মুমিনুল হক মাত্র ৭ রান করে ফিরে যান। দলীয় ৩৭ রানে শামির বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। দলীয় ৪৪ রানে শামির বলে আগারওয়ালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মিথুন। শামির বাউন্সারে মারতে গিয়ে মিড-উইকেটে ক্যাচ হন তিনি।
লাঞ্চ বিরতির সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৬০ রান। বিরতি থেকে ফিরে দলীয় ৭২ রানে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর লিটন দাস ও মুশফিক প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। ৬৩ রানের জুটি গড়তে সক্ষম হন তারা। দলীয় ১৩৫ রানে বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লিটন। তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৩৫ রান।
চা বিরতির সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ১৯১। তৃতীয় সেশনের শুরুতে উমেশের বলে বোল্ড হন মিরাজ। মুশফিক ও মিরাজ ৫৯ রানের জুটি গড়েন। মিরাজের সংগ্রহ ৩৮ রান। এরপর ব্যক্তিগত ৬ রান বিদায় নেন তাইজুল।
এমন ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও এক প্রান্তে টিকে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। দলীয় ২০৮ রানে পূজারার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মুশফিকও। দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক। তার সংগ্রহ ৬৪ রান। দলীয় ২১৩ রানে শেষ উইকেটের পতন হয়। অশ্বিনের বলে মারতে গিয়ে ইবাদত হোসেন বল তুলে দিয়েছিলেন আকাশে। সহজ ক্যাচটি ধরে ফেলেন উমেশ যাদব।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ শামি ৪টি, উমেশ যাদব ২টি, ইশান্ত শর্মা ১টি ও রবীচন্দ্রন অশ্বিন ৩টি করে উইকেট নেন। ভারতীয় ওপেনার মায়াঙ্গ আগারওয়াল শুক্রবার ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। ২৪৩ রান করায় ম্যাচসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ইনিংস ও ১৩০ রানে জয়ী ভারত।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৫০ (৫৮.৩ ওভার)
(সাদমান ৬, ইমরুল ৬, মুমিনুল ৩৭, মিথুন ১৩, মুশফিক ৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১০, লিটন ২১, মিরাজ ০, তাইজুল ১, রাহি ৭*, ইবাদত ২; ইশান্ত ২/২০, উমেশ ২/৪৭, শামি ৩/২৭, অশ্বিন ২/৪৩, জাদেজা ০/১০)।
ভারত প্রথম ইনিংস: ৪৯৩/৬ডিক্লেয়ার (১১৪ ওভার)
(আগারওয়াল ২৪৩, রোহিত ৬, পূজারা ৫৪, কোহলি ০, রাহানে ৮৬, জাদেজা ৬০*, ঋদ্ধিমান ১২, উমেশ ২৫*; ইবাদত ১/১১৫, রাহি ৪/১০৮, তাইজুল ০/১২০, মিরাজ ১/১২৫, মাহমুদউল্লাহ ০/২৪)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ২১৩ (৬৯.২ ওভার)
(সাদমান ৬, ইমরুল ৬, মুমিনুল ৭, মিথুন ১৮, মুশফিক ৬৪, মাহমুদউল্লাহ ১৫, লিটন ৩৫, মিরাজ ৩৮, তাইজুল ৬, রাহি ৪*, ইবাদত ১; ইশান্ত ১/৩১, উমেশ ২/৫১, শামি ৪/৩১, রবীন্দ্র জাদেজা ০/৪৭, অশ্বিন ৩/৪২)।
ম্যাচ সেরা: মায়াঙ্ক আগারওয়াল (ভারত)।