ফিটনেসবিহীন গাড়িতে জ্বালানি না দিতে নির্দেশ

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ফিটনেসবিহীন গাড়িতে জ্বালানি (তেল, গ্যাস, অকটেন বা পেট্রোল) না দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ফিটনেসবিহীন তিন লাখ ৯০ হাজার ৫১ গাড়ির ফিটনেস নবায়ন করতে আরও দুই মাস সময় দিয়েছে আদালত। বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টেও দ্বৈত বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন। আদালতে বিআরটিএ-এর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী, রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।
ফিটনেসবিহীন যত গাড়ি রাস্তায় চলছে তাদের পেট্রোল স্টেশন থেকে গ্যাস-ফুয়েল সাপ্লাই বন্ধ করার আদেশ দিয়েছে। এ আদেশ আগামী দুই মাস অথবা এর মধ্যে কেউ যদি ফিটনেস নবায়ন না করে তাহলে এ আদেশ ফিটনেস নবায়ন না করা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ১০ জানুয়ারি ২০২০ ধার্য করেন। বুধবার বিআরটিএ তাদের দাখিলকৃত প্রতিবেদনে জানায়, হাইকোর্টের বেঁধে দেয়া দুই মাস সময়ের মধ্যে শুধু ৮৯ হাজার ২৬৯ গাড়ি ফিটনেস নবায়ন করেছে। ইতোমধ্যে পুলিশ ফিটনেসবিহীন গাড়ির সারাদেশে অভিযান চালাচ্ছেন সেই মর্মে পুলিশের আইজির পক্ষে এক প্রতিবেদন দাখিল করেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। গত ২৩ জুলাই এক আদেশে ঢাকাসহ সারাদেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়িগুলো দু’মাসের মধ্যে ফিটনেস নবায়ন করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
গত ১ আগস্ট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটি সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়। এর আগে আদালতে দাখিল করা বিআরটিএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকাসহ সারাদেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ির সংখ্যা ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩২০টি। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২ লাখ ৬১ হাজার ১১৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৮৮, রাজশাহী বিভাগে ২৬ হাজার ২৪০, রংপুর বিভাগে ৬ হাজার ৫৬৮, খুলনা বিভাগে ১৫ হাজার ৬৬৮, সিলেট বিভাগে ৪৪ হাজার ৮০৫ এবং বরিশাল বিভাগে ৫ হাজার ৩৩৮টি গাড়ি মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন রয়েছে।
গত ২৪ জুন আদালত ঢাকাসহ সারাদেশে ফিটনেসবিহীন তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। সে অনুসারে, হাইকোর্টে এ প্রতিবেদন দেয় বিআরটিএ। গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি সংক্রান্ত একটি ইংরেজী দৈনিকে গত ২৩ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন এ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। এরপর ওইদিন আদালত রুলসহ আদেশ দেয়। রুলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর বিষয়ে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, পাশাপাশি সংবিধানের ৩২ ধারার আলোকে জীবন বাঁচার অধিকার বাস্তবায়নে কেন মোটর ভেহিক্যাল আইন ১৯৮৩-এর বিধানগুলো সঠিকভাবে পালনের জন্য কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছে আদালত। রুলের বিবাদীরা হচ্ছেন-সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজি, চেয়ারম্যান বিআরটিএ, ঢাকার ডিসি ট্রাফিক (উত্তর ও দক্ষিণ), বিআরটিএ ডিরেক্টর (রোড নিরাপত্তা) ও দুদক চেয়ারম্যান।