অনুদানের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ॥ চা শ্রমিকদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছে সরকার

14
সদর উপজেলায় চা শ্রমিক ও স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংস্থার মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের অনুদানের চেক প্রদান করছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি।

স্টাফ রিপোর্টার :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট ১ আসনের সংসদ সদস্য ড.একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সরকার এখন প্রতি বছরে ৫৫ হাজার কোটি টাকা সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ব্যয় করছে। ১০ বছর আগে ছিল মাত্র ১১ হাজার কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ সরকার চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এ সরকার গরীবের সরকার। সুখে-দুঃখে সকলের পাশে থাকাই এ সরকারের লক্ষ্য। গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেট সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্তৃক আয়োজিত চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় চা শ্রমিক ও স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংস্থার মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের এক কালীন অনুদানের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলেই দেশে গরিবের সংখ্যা কমেছে, দেশ উন্নত হয়েছে। দেশের মানুষ উন্নত জীবনযাপন করতে পারছে, নিরাপদে তাদের বাড়ি ঘরে থাকতে পারছে। উন্নত দেশ গঠনের শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিকা অপরিসীম। শ্রমিকদের ভাগ্যে উন্নয়নে তাদের পাশে থেকে কাজ করছে এ সরকার। চা-বাগান শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়ে বাস্তবায়ন করেছে। যার সুফল দেশের চা শ্রমিকরা ভোগ করতেছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রকল্পের উপকার ভোগী চা শ্রমিকরা তাদের জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। বর্তমানে চা-শ্রমিকদের সন্তানরা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারসহ সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই তা সম্ভব হয়েছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে সরকার নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশ আজ সকল ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রুল মডেল। চা শ্রমিক সহ যে সকল সামাজিক সংস্থায় অনুদান দেওয়া হয়েছে আপনারা সবাই উন্নয়ন মূলক কাজে টাকাটি ব্যয় করার আহবান জানান।
সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসার কাজী মহুয়া মমতাজের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আসলাম উদ্দিন, সিলেট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক নিবাশ রঞ্জন দাস, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশফাক আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান মিল্লাত আহমদ চৌধুরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামিমা আক্তার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন চেয়ারম্যান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ফারহানা নাসরিন, ২২ বাগানের প্রেসিডেন্ট রাজু গোয়ালা, সমাজসেবা ফিল্ড সুপারভাইজার বেবী রাণী ঘোষ, ইউনিয়ন সমাজকর্মী ইকরামুল কবির প্রমুখ।
এ সময় সদর উপজেলার ১২টি চা বাগানের ১ হাজার ৮শত ৮৮ জন চা শ্রমিকদের মাঝে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে সর্বমোট ৯৪ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকার অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি সদর উপজেলার ৭টি সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংস্থাসহ সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার বেশ কয়েকটি সংগঠনের মধ্যে অনুদানের চেক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি।
এদিকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। তিনি বলেন, আর যারা মারা যাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই চোরাচালানে জড়িত। এ কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ঢালাওভাবে ভারতকে দোষারোপ না করে নিজেদের দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ দেন মন্ত্রী।
গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০৩ সালে ১৬৬ জন মানুষ বর্ডারে (সীমান্তে) মারা গেছে। কিন্তু গত বছর মারা গেছে মাত্র ৩-৪ জন। যারা মারা গেছে তারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেছে কিংবা চুরি করতে গেছে। অবৈধভাবে প্রবেশ করা বন্ধ হলে বর্ডারে হত্যাও বন্ধ হবে।
এ সময় সাংবাদিকরা ভারতকে ফেনী নদীর পানি ও এলপিজি গ্যাস প্রদান নিয়ে তাকে প্রশ্ন করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতকে আমরা খাবার পানি দিয়েছি, বিষয়টি নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হচ্ছে। মাত্র ছয় হাজার লোকের একটি শহরে আমরা খাবার পানি দিচ্ছি। এই পানি দেয়ার মাধ্যমে আমরা ভারতকে বোঝালাম আমাদের মন অনেক বড়। সেই সঙ্গে তাদের দায়বদ্ধতার মধ্যে রাখলাম। গ্যাস প্রদান বিষয়ে তিনি বলেন, ভারতে দেশের গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে না। বরং বিদেশ থেকে গ্যাস কিনে সেটি রূপান্তর (এলপিজি সিলিন্ডার) করে ভারতের কাছে বিক্রি করা হবে। এটি বাংলাদেশের জন্য সুখবর। নতুন একটি বাজার আমরা পেয়েছি।