জগন্নাথপুরে দুটি সরকারি স্কুলে শিক্ষক সংকট প্রকট, কোন রকমে চলছে পাঠদান

21

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে মাধ্যমিক পর্যায়ের ২টি সরকারি স্কুলের শিক্ষক সংকটের কারণে কোন রকম জোড়াতাড়ি দিয়ে চলছে পাঠদান। যুগযুগ ধরে জগন্নাথপুর স্বরুপ চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মান নিয়ে শঙ্কিত অভিভাবকরা। প্রতি বছর ভর্তি যুদ্ধে লড়াই করে শুধু মেধাবী শিক্ষার্থীরা এসব সরকারি স্কুলে ভর্তি হন। শুধু শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের মনে সারাক্ষণ অজানা হতাশা বিরাজ করে। যদিও শিক্ষক সংকট দূরীকরণে পরিকল্পনামন্ত্রী ও স্থানীয় প্রশাসন চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাতেও কাজ হচ্ছে না। তবে খন্ডকালীন শিক্ষকদের দিয়ে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে পাঠদান চলছে। এরপরও এসব স্কুল লেখপাড়ার মান ও পরীক্ষার ফলাফলে তাদের অবদান ধরে রেখেছে।
জানা যায়, ১৯২৬ সালে জগন্নাথপুর পৌর শহরের সিলেটী বাস স্ট্যান্ড এলাকায় প্রায় ৫ একর জমির উপর জগন্নাথপুর গ্রামের প্রয়াত শিক্ষানুরাগী ভারত চন্দ্র রায় তাঁর বাবার নামানুসারে স্বরুপ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৭ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ হয়। মূলত স্কুলটি জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকেই শিক্ষক সংকট লেগেই আছে। শিক্ষক সংকট যেন পিছু ছাড়তে চাইছে না।
এ ব্যাপারে ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার জগন্নাথপুর স্বরুপ চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ছায়াদ আলী বলেন, স্কুলের ছাত্র সংখ্যা ৩৩০ জন। শিক্ষক সংখ্যা ১০ হলেও আছেন মাত্র ৪ জন। অনেক চেষ্টা করেও শিক্ষক সংকট দূর হচ্ছে না। যদিও খন্ডকালীন আরো ৫ জন শিক্ষক সহ ৯ জনে মিলে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে পাঠদান চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খন্ডকালীন শিক্ষকদের বেতন ছাত্রদের কাছ থেকে নিয়ে দেয়া হয়। যা উচিত ছিল না। তিনি আরো বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার চেষ্টা করলেও আজ পর্যন্ত আমাদের স্কুলের শিক্ষক সংকট দূর না হওয়ায় রীতিমতো নিরাশ হয়ে গেছি। তবে শিক্ষার মান ও পরীক্ষার কাক্সিক্ষত ফলাফল আমরা এখনো ধরে রেখেছি।
এদিকে-একই অবস্থা বিরাজ করছে জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত শেখর রায় বলেন, স্কুলের ছাত্রী সংখ্যা ৩২৫ জন। শিক্ষক সংখ্যা ৯ জন হলেও আছেন মাত্র ৪ জন। প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রধান শিক্ষক সহ আরো ৫ জন শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। যদিও খন্ডকালীন শিক্ষক আছেন আরো ৪ জন। তাঁদেরকে নিয়ে কোন রকমে পাঠদান চলছে। বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৭৯ সালে। জাতীয়করণ হয় ১৯৮৬ সালে। মূলত স্কুলটি জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকেই শিক্ষক সংকট রয়েছে। যুগযুগ ধরে শিক্ষক সংকট যেন পিছু ছাড়তে চাইছে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লেখাপড়ার মান ও পরীক্ষার ফলাফল হতাশা জনক নয়।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম বলেন, সরকারি এ ২টি স্কুলের শিক্ষক সংকটের বিষয়টি আমাদের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে সরকার শিক্ষক নিয়োগ দিলে এ ২টি স্কুলের শিক্ষক সংকট সমস্যা সমাধান হবে।