মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে মরমী কবি রাধারমণের জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, জগন্নাথপুর পৌর শহরের কেশবপুর গ্রাম এলাকায় মরমী কবি জমিদার রাধারমণের বিশাল জায়গা সম্পত্তি রয়েছে। এসব জায়গার মধ্যে মৌজা ভরতপুর জেএল নং-৪৬, সাবেক দাগ নং-১১৫, খতিয়ান নং-৫০ এতে ৩ একর ১৪ শতক জায়গা নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা হয়। উক্ত জায়গা ভিপি হলে বন্দোবস্ত পান কেশবপুর গ্রামের মৃত হাজী আসিকনুর এর ছেলে সুনাফর আলী। তবে এ বন্দোবস্ত বাতিলের প্রক্রিয়া চলায় সুনাফর আলী বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা নং-২১ দায়ের করেন। এ মামলায় আসামী করা হয় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারি (ভূমি), তপশীলদার ও রাধারমণ সমাজ কল্যাণ সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি জিলু মিয়াকে।
পরে আবার জামাল উদ্দিন নামের আরেক ব্যক্তি বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে আরেকটি সিআর মামলা নং-৬৯/১৯ দায়ের করেন। এ মামলায় আসামী করা হয় রাধারমণ সংগঠনের সভাপতি জিলু মিয়া, সহ-সভাপতি কালা আছকির, যুগ্ম-সম্পাদক রমজান আলী, আবদুল কাদির ও টুনু মিয়াকে। এছাড়া জামাল উদ্দিনের দায়ের করা সিআর ৫০ নং মামলায় রাধারমণ সংগঠনের সভাপতি জিলু মিয়াকে আসামী করা হলেও সাক্ষী করা হয় রাধারমণ সংগঠনের কালা আছকির, রজমান আলী, তেরাই মিয়া ও টুনু মিয়াকে। এসব ঘটনা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সূত্র জানায়, রাধারমণের নামে সংগঠন করে বাণিজ্য চলছে। প্রতি বছর উৎসবের নামে প্রবাসীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে আত্মসাত করা হয়। এছাড়া কালা আছকির স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হয়ে অপকর্ম করছেন। সংগঠনের আরো কিছু সদস্যদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ করা হয়।
তবে ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার রাধারমণ সমাজ কল্যাণ সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি জিলু বলেন, আমাদের সংগঠনের সকল হিসাব-নিকাশ সরকারি ভাবে অডিট হয়। রাধারমণের উৎসব স্থানীয় প্রশাসন ও আমাদের যৌথ উদ্যোগে হয়। সুতরাং এখানে কারো কাছ টাকা এনে আত্মসাতের সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে রাধারমণ সংগঠনের সহ-সভাপতি ও স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড আ.লীগের সহ-সভাপতি কালা আছকির বলেন, আমি ২০১৩ সালে সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ সিদ্দিক আহমদের হাত ধরে বিএনপি থেকে আ.লীগের যোগদান করেছি। রাজনীতিতে পরিবর্তন হলেও কোন প্রকার অপকর্ম করি না। যা এলাকাবাসী জানেন। এ ব্যাপারে রাধারমণ সংগঠনের যুগ্ম-সম্পাদক বাউল রমজান আলী বলেন, এক মামলায় আমাদেরকে আসামী আবার অন্য মামলায় সাক্ষী করার বিষয়টি বুঝতে পারছি না। তবে তিনি গানের ছন্দে-ছন্দে বলেন, হায়রে রাধারমণ আর কত কাঁদাবি।