স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর দক্ষিণ সুরমা শিববাড়ী পাঠানপাড়াস্থ আলোচিত আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ঘটনায় তিন জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনার প্রায় ২৯ মাস পর গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেটের মুখ্য বিচারিক মহানগর হাকিম আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর আবুল হোসেন।
চার্জশিটে অভিযুক্তরা হচ্ছে, জঙ্গি হামলায় নিহত মর্জিনার বোন আর্জিনা (১৯), তার স্বামী জহুরুল হক উরফে জসিম (২৫) এবং বান্দরবানের নাইখ্যাংছড়ির হাসান (২৬)। তারা তিনজনই চট্টগ্রামের আদালতে বন্দি রয়েছেন। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে একটি জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ এ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, সন্ত্রাস দমন আইনের ৬(২), ৭(৩), ৮, ৯(৩) ধারায় অভিযোগপত্রে ওই তিনজনের নামোল্লেখ করা হয়। আসামিরা নব্য জেএমবির সদস্য। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন আসামি থাকলেও বোমা বিস্ফোরণে তারা মারা যাওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। যাদের নাম বাদ পড়েছে, তারা হচ্ছে- মৌলভীবাজারে স্ত্রী সন্তানসহ মারা যাওয়া জঙ্গি মোশাররফ, আতিয়া মহলে বোমা বিস্ফোরণে মারা যাওয়া মর্জিনা, তামিম আহমদ ফরাজী এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও দু’জন।
উল্লেখ্য, আতিয়া মহলে ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। ‘অপারেশন টোয়ালাইট’ নামের ওই অভিযান চলাকালে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় আতিয়া মহলের পাশেই বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। এতে র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের তৎকালীন প্রধান লে. কর্ণেল আবুল কালাম আজাদ ও দুই পুলিশ পরিদর্শকসহ ৭ জন নিহত হন। এ ঘটনায় মোগলাবাজার থানার তৎকালীন এসআই শিপলু দাস বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া আতিয়া মহল থেকে বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় থানার তৎকালীন এসআই সুহেল আহমদ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া আতিয়া মহলে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৪ জঙ্গি নিহতের ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। বোমা বিস্ফোরণে হত্যার ঘটনার মামলায় গত ১৪ জুলাই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। তাতে উল্লেখ করা হয়, বোমা হামলায় নেতৃত্বদানকারী জঙ্গি মোশাররফ ও নাজিম মৌলভীবাজারের দুটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত হন। আতিয়া মহলে পাঁচদিন অভিযান চালিয়েছিল সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা। এ জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মামলাগুলো প্রথমে পুলিশ তদন্ত করে, পরে দায়িত্বভার যায় পিবিআইয়ের কাছে।