হবিগঞ্জে ১৮শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যতিক্রমী পতাকা উৎসব

13
হবিগঞ্জে পতাকা উৎসবে জাতীয় পতাকা হাতে অতিথিবৃন্দ।

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হাজারো নারী-পুরুষ আর শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কণ্ঠে ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ তুমুল হর্ষধ্বনি-আনন্দ-উল্লাস ও করতালির মধ্য দিয়ে প্রায় ১৮শ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের হাতে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা তুলে দিল হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন। মহান স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর সোমবার সকালে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই প্রথম এমন একটি ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন হবিগঞ্জের ডিসি মাহমুদুল কবীর মুরাদ। এদিন সকাল থেকে মিলনায়তনে বাঁশের কঞ্চিতে লাগানো কাগজে অঙ্কিত লাল-সবুজের পতাকা নেড়ে স্কুল-মাদ্রাসা-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার শত শত মানুষ জড়ো হতে থাকে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি-শিক্ষা) মোঃ সাইফুজ্জামানের সভাপতিত্বে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা বিতরণ উপলক্ষে ‘পতাকা উৎসব’ শিরোনামে এই মূল অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সকাল ১০ টায়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ডিসি মাহমুদুল কবীর মুরাদ। এ সময় মঞ্চে ছিলেন স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক উপসচিব মোঃ নুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, পৌর মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, এডিসি (রেভিনিউ) তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া, এডিসি (জেনারেল) অমিতাভ পরাগ তালুকদার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের কমান্ডার এডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠান, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডি বিভাগের অধ্যাপক জহিরুল হক শাকিল, প্রেসক্লাব সভাপতি হারুনুর রশীদ চৌধুরী, মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জাহানারা খাতুন ও কবি তাহমিনা বেগম গিনি। অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা ডিসি মুরাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকা বিতরণের মতো এমন একটি ভাবনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, আমি দেখেছি হবিগঞ্জের অনেক শিক্ষা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি ও সরকারী-বেসরকারী দফতরে দীর্ঘ নয়মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ‘লাল-সবুজের’ জাতীয় পতাকা সঠিক মাপ- ছাড়াই ছেড়া-রং বিবর্ণ, একটি কাপড় বাঁশের কঞ্চি বা বাঁশ দিয়ে উঠিয়ে রাখা হয়। তিনি বলেন, এটা জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন যেমন নয়, তেমনি অশ্রদ্ধা-অবজ্ঞাও বটে। যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শিক্ষার্থীদের মাঝে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় পতাকাসহ ৭১’র সেই দিনগুলোর পটভূমি ছড়িয়ে দেয়ার ভাবনা থেকেই একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে নিজ দায়িত্ববোধ থেকেই জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং এর সঠিক মাপ সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে অবহিত করার অভিপ্রায় নিয়েই এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এখন থেকে হবিগঞ্জের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা অব্যাহত রাখবে।
এদিকে একই সময় জেলার ৯ উপজেলার ইউএনও, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের হাতে সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা তুলে দেন। যা সরাসরি ভিডিও চিত্রে পুরো জেলার মানুষকে দেখানো হয়।