পিন্টু দেবনাথ কমলগঞ্জ থেকে :
প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক বখাটে ছেলের হামলায় আহত হয়েছে কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার হাই স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী। টিলাগড় গ্রামের নিজ বাড়ির অদুরে রাস্তা গতিরোধ করে যৌন হয়রানি, টানা হেচড়ার পর রাস্তায় ফেলে ছাত্রীর বুকের উপর উঠে ছুরি দিয়ে আঘাতের চেষ্টাকালে সহপাঠীদের চিৎকারে আত্মরক্ষা পায়। শনিবার বেলা পৌনে ৩ টায় পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য টিলাগড় মসজিদের পাশে বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়।
সরেজমিন কলেজ শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে টিলাগড় গ্রামের আং করিমের মেয়ে (বিউটি আক্তার-১৮) তার সহপাঠীসহ তিন শিক্ষার্থী টিলাগড় মসজিদের পাশে আসার সাথে সাথেই শনিবার বিকাল পৌনে ৩টায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে টিলাগড় গ্রামের মিলন খান এর বখাটে ছেলে সাইফুল খান (২৩) রাস্তা গতিরোধ করে। প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় প্রকাশ্যে টানা হেচড়া করে মাটিতে ফেলে বিউটি আক্তারের বুকের উপর উঠে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে। বখাটের টানাহেচড়ায় বিউটির মাথা ও পায়ে আঘাত প্রাপ্ত হয়। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের হাল্লা-চিৎকারে বিউটির গলার স্বর্ণের চেইন, ঘড়ি, নাকফুল, কানের দুল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সহপাঠী লুবনা বেগম, আকলিমা বেগম বিউটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। বিউটি পতনঊষার স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
বিউটির বাবা আব্দুল করিম, সাবেক ইউপি সদস্য ওয়াজিদ আলী জানান, বিষয়টি কলেজ শিক্ষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন ও কমলগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় মেয়ের শারীরিক অবস্থা কিছুটা অবনতি হওয়ায় সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার বিকাল ৫ টায় পতনঊষার স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান তওফিক আহমদ বাবু, কলেজ অধ্যক্ষ মো. ফয়েজ আহমদ, শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এস.আই আনজির আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও মেয়ের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
তওফিক আহমদ বাবু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি খুবই দু:খজনক। এর আগেও বখাটে ঐ ছেলের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে এবং এ ঘটনায় কোন ছাড় দেওয়া হবে না।
অভিযুক্ত বখাটে সাইফুল খান এর পিতা মিলন খান ছাত্রীর উপর হামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ছেলের যন্ত্রণায় আমি নিজেই অতিষ্ঠ। গত ঈদের দিনে সে তার মাকেও মারধর করেছে। তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত।
শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনজির আহমদ বলেন, কলেজ ছাত্রীর উপর হামলাকারী ছেলে খুবই খারাপ। ছেলের বাবার বিরুদ্ধেও আগে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং মেয়ের বক্তব্য গ্রহণ করেছি। ছেলেকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগ দেয়ার পর আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
কমলগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত ইউএনও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি আমি শোনার সাথে সাথে কমলগঞ্জ থানার ওসিকে তদন্তপূর্ব্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি।