কাজিরবাজার ডেস্ক :
ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তারের মধ্যে রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগ পরীক্ষাকেন্দ্রে ইচ্ছামত ফি আদায়ে লাগাম টানার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সর্বোচ্চ কত টাকা নেয়া যাবে, তা ঠিক করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী এখন থেকে সর্বোচ্চ পাঁচশ টাকা নেয়া যাবে পরীক্ষার জন্য। আর সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে হবে পরীক্ষা।
মোট তিনটি পরীক্ষার ফি ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষা এনএসওয়ান এবং আইজিএম ও আইজিইর জন্য নেওয়া যাবে এই ৫০০ টাকা। এতদিন ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত আদায়ের তথ্য ছিল।
আর সিবিসি (আরবিসি, প্লাটিলেট ও হেমাটোক্রিট মিলিয়ে) নেয়া যাবে ৪০০ টাকা। একদিন এক হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হতো।
রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সম্মেলন কক্ষে রাজধানীতে হাসপাতাল/ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক আমিনুল হাসান বলেন, ‘আগে সবাই ইচ্ছামতো নিত, এখন আমরা এই তিনটা টেস্টের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছি। এর বেশি কেউ নিতে পারবে না। আর সরকারি হাসপাতালে ফ্রি করবে।’
‘আমরা নির্দেশ দিয়েছি, তারা সবাই ছিল। তাই এই সিদ্ধান্ত মেনেই গিয়েছে। আজকে থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর।’
চলতি বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। জ্বর হলেই নগরবাসী ছুটছে হাসপাতাল ক্লিনিকে, পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে চাইছে ডেঙ্গু হয়েছে কি না। আর এই সুযোগ নিচ্ছে হাসপাতাল আর রোগ পরীক্ষাগারগুলো। সরকারি হাসপাতালের চেয়ে দ্বিগুণ, তিন গুণ, এমনকি চার গুণ টাকা আদায়ের তথ্য মিলেছে।
প্রথম ধাপের ডেঙ্গু পরীক্ষায় যেসব সামগ্রী লাগে তার দাম এক থেকে সর্বোচ্চ তিনশ টাকা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই পরীক্ষায় লাগে ৩০০ টাকা, বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে লাগে ৬০০ টাকা। অথচ বেসরকারি বিভিন্ন চিকিৎসালয়ে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত আদায়ের তথ্য মিলেছে।
ডেঙ্গুরর প্রাথমিক পরীক্ষা এনএসওয়ান এর জন্য বারডেম হাসপাতালে ৮০০ টাকা, সেন্ট্রাল হাসপাতালে এক হাজার দুইশ টাকা, ইউনাইটেড হাসপাতালে এক হাজার ৮৭৫ টাকা এবং ল্যাবএইডে সর্বোচ্চ দুই হাজার ১২৫ টাকা টাকা আদায়ের তথ্য আছে।
ইউনাইটেড হাসপাতালে আইজিএম/আইজিজি পরীক্ষা করার জন্য আদায় করা হতো তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। বারডেম নিত এক হাজার, সেন্ট্রাল দেড় হাজার এবং ল্যাবএইড দুই হাজার।
এই বিপুল টাকা আদায় করা হলেও ডেঙ্গুর প্রথম ধাপের পরীক্ষায় যেসব সামগ্রী লাগে তার দাম এক থেকে সর্বোচ্চ তিনশ টাকা। ডেঙ্গুর বিস্তারের মধ্যে এই মাত্রাতিরিক্ত ফি আদায় নিয়েও আছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
সভায় রোগ পরীক্ষার ফি আদায় ছাড়াও আরো বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়। জানানো হয়, সব হাসপাতাল ও রোগ পরীক্ষাকেন্দ্রে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য একটি ‘ওয়ান স্টপ সেন্টার’ চালু হবে। সব হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হবে।
ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যার অনুপাতে ডাক্তার, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও হয় বৈঠকে।