কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন করতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। বিভিন্ন সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয় সংশ্লিষ্টরা। তবে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন করতে চায় সরকার। এজন্য ৫৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সমূহের সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়ন’ নামের একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
জানা গেছে, অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে আগামী ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বেবিচক)। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও মজবুত হলে অপরাধ করার প্রবণতাও কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো হবে।
বেসামারিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিকমানের তিনটি বিমানবন্দরে নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ ও সংস্থাপনের জন্য জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা) একটি সার্ভে করে। ওই সার্ভের পরিপ্রেক্ষিতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রফতানি কার্গো স্ক্রিনিংয়ের জন্য দুটি ইডিএস ও আন্তর্জাতিক বহির্গমন যাত্রীদের স্ক্রিনিংয়ের জন্য চারটি বডি স্ক্যানার, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বহির্গমন যাত্রীদের জন্য একটি বডি স্ক্যানার এবং ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বহির্গমন যাত্রীদের স্ক্রিনিংয়ের জন্য একটি বডি স্ক্যানার সরবরাহের জন্য জাইকা কারিগরি সহায়তা দিতে রাজি হয়। এ লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই ‘রেকর্ড অব ডিসকাশন’ স্বাক্ষরিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর জাইকা ও বেবিচক-এর মধ্যে অনুষ্ঠিত ‘জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি (জেসিস)’ সভায় ‘মিউনিটস অব মিটিং (এমওএম)’ স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ৫৪ কোটি ১০ লাখ টাকা। বাকি ৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা বেবিচকের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বেশকিছু সুপারিশ দিয়ে প্রকল্পটির উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করার কথা বলা হয়েছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে সুপারিশগুলো প্রতিপালন শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরী বলেছেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নসহ সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।
কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, দেশের বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকার পরও নানা প্রশ্ন উঠে বিভিন্ন সময়। অনেকেই ঘোষণা ছাড়াই পিস্তল নিয়ে হাজির হয় যা আবার ধরাও পরে। এছাড়াও অনেক চক্র নানাভাবে বিভিন্ন অবৈধ্য পণ্য পাচার করতে চায়। এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা যত বেশি শক্ত থাকবে এসব রোধ করা সহজ হবে বলেও জানান একাধিক কর্মকর্তা।