শিল্পাচার্যের প্রয়াণ বার্ষিকী আজ

41

কাজিরবাজার ডেস্ক :
এ দেশের চারুশিল্প ভুবনের পথিকৃৎ, প্রকৃতি ও মানুষের চিত্রকর, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রণী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ৪৩তম প্রয়াণ বার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। তিনি ১৯৭৬ সালে ২৮ মে ফুসফুসে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। জয়নুল আবেদিনের প্রয়াণ বার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকালে শিল্পাচার্যের সমাধিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
এ দেশের শিল্পের ভিত রচনায় এক উজ্জ্বল নক্ষত্র জয়নুল আবেদিন। তার হাত ধরেই বিকশিত হয় এ দেশের চারুশিল্প মাধ্যম। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত করেন ঢাকা আর্ট কলেজ (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট)। স্বদেশ ভূমিতে সবাইকে সঙ্গী করে এগিয়ে নিয়েছেন চারুকলা আন্দোলনকে।
রং-তুলি ছোঁয়ায় জয়নুল আবেদিন এঁকেছেন ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে এঁকেছেন ‘দুর্ভিক্ষের রেখাচিত্র’। ১৯৬৯ সালে তার ক্যানভাসে উঠে এসেছে গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট। ১৯৭০ সালে গ্রাম বাংলার উৎসব এঁকেছেন ৬৫ ফুট দীর্ঘ বিখ্যাত চিত্রকর্ম নবান্ন। একই বছরে মনপুরা নামে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের হৃদয়স্পর্শী চিত্র সৃজন করেছেন। শিল্পীর এসব কালজয়ী শিল্পকর্ম দেশের সীমা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিম-লে পেয়েছে ব্যাপক প্রশংসা ও স্বীকৃতি। মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে সংস্কৃতির বিকাশের স্বীকৃতিস্বরূপ মহাশূন্যের বুধ গ্রহের একটি আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের নামকরণ করা হয়েছে শিল্পাচার্যের নামে। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে ও নাসা মিলে এটির নাম দিয়েছে ‘আবেদিন ক্রেইটার’।
১৯৭৪ সালে দেশ ভাগের মধ্যদিয়ে সঙ্গীসাথীদের নিয়ে জন্মভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন জয়নুল আবেদিন মাটির টানে, নাড়ির টানে, জন্মভূমির প্রতি আপন অঙ্গীকার রক্ষার তাগিদ অনুভব করে। স্বদেশে নিজস্ব শিল্পাঙ্গন বা শিল্প পরিবেশ আর শিল্পী সমাজ গড়ে তোলার স্বপের জাল বুনেছেন আজীবন।
জাতীয় অধ্যাপক শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন এ দেশের পথিকৃত সৃজন শিল্পী-একাধারে চারুকলা চর্চাবিদ সংগঠক হিসেবে সর্বজনবিদিত। শিল্পাচার্য তার সারা কর্মজীবনের বেশিরভাগই ব্যয় করেন জন্মভূমির শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গনের ঐতিহ্য সংরক্ষণের চিন্তায়। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন তার এক লেখায় লিখেছেন, ‘জীবনই অভিজ্ঞতা, অভিজ্ঞতাই জীবন। সবচেয়ে সুন্দর হলো সত্য- সে সত্যটা হলো জীবন।’ আর সেই সুন্দরের সাধনাই করে গেছেন সারাজীবন শিল্পাচার্য। ১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এই বরেণ্য শিল্পী।