স্পোর্টস ডেস্ক :
ত্রিদেশীয় সিরিজের লীগ পর্বের শেষ ম্যাচটি আজ অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ও স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড লড়াই করবে। বাংলাদেশ সময় বেলা পৌনে চারটায় ডাবলিনের ক্যাসল এভিনিউয়ের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব মাঠে ম্যাচটি শুরু হবে।
ম্যাচটি আয়ারল্যান্ডের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের দেশে হচ্ছে ত্রিদেশীয় সিরিজ। অথচ এখনও একটি ম্যাচেও জিততে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৯৬ রানে ও ৫ উইকেটে হেরেছে আইরিশরা। দুটি ম্যাচ হেরেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটিতে ভাগ্যক্রমে ২ পয়েন্ট পেয়েছে। বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় এই পয়েন্ট কুড়িয়ে পেয়েছে আয়ারল্যান্ড। তাতে কী আর সন্তুষ্টি মিলে। জিতলে মিলবে আসল শান্তি। সেই শান্তির খোঁজে আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়াই করবে আয়ারল্যান্ড।
স্বাগতিকরা বাংলাদেশকে বিপদে ফেলতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররাও কী চুপচাপ বসে থাকবে? তা নিশ্চয়ই নয়। বাংলাদেশ ক্রিকেটাররাও আইরিশদের হারাতে ঝাঁপিয়ে পড়বে। দুই দলের মধ্যকার প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় সিরিজে বাংলাদেশের বিপদ আসতে পারত। সঙ্গে প্রস্তুতি পুরোদমে না হওয়ার বিষয়টিতো ছিলই। দিন যত গড়িয়েছে ততই সব ঠিক হয়েছে। কিন্তু আজ আবার যখন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ, তখন জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে চায় বাংলাদেশ দল।
এখন পর্যন্ত সিরিজে হারেনি বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে জিতেছে। প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জেতার সম্ভাবনাময় ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে। আজকের ম্যাচটির আগেই ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে নিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট পেয়ে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে। ৯ পয়েন্ট পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ হচ্ছে ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। আজ যদি বাংলাদেশ জিতে, তাহলে অপরাজিত থেকে ফাইনালে খেলতে নামতে পারবে বাংলাদেশ।
যদিও ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ‘রিজার্ভ বেঞ্চে’র একাধিক ক্রিকেটারকে আজ খেলাতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রস্তুতি ম্যাচে যেমনটি আয়ারল্যান্ডের উলভসের বিপক্ষে হয়েছে, সেইরকম হারের ফলও হতে পারে। তবে তা নিয়ে মাথাব্যথা আসলে নেই। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি আসলে প্রস্তুতি সেরে নেয়া এবং রিজার্ভ বেঞ্চের ক্রিকেটাররা কেমন করেন তা দেখার ম্যাচই হয়ে উঠেছে। এরপরও কিছুটা সাবধানে এবং নিজেদের খেলাটা খেলে যেতে পারলেই আয়ারল্যান্ডকে হারানো সম্ভব। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তা করে দেখিয়েছেও। দলে সেরা সব ক্রিকেটার ছাড়া আয়ারল্যান্ডের গড়া ৩২৭ রানকে টপকেও জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তার মানে যারাই বাংলাদেশ একাদশে থাকবেন তারা যদি নিজেদের সেরাটা খেলেন, তাহলেই আইরিশদের হারানো সম্ভব।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আজ ম্যাচ থাকলেও আসলে ফাইনাল ম্যাচ নিয়েই সবার মধ্যে ভাবনা আছে। বাংলাদেশ যে আরেকটি ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠেছে। আর ফাইনালের ‘চোকার্স’ বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে। দলটি যে এখন পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ছাড়া আর কোন শিরোপাই জিততে পারেনি। শুক্রবার ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতার সুযোগটি ভালভাবেই আছে।
এখন পর্যন্ত এই সিরিজটি বাদে ছয়বার ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। যার সবকটিতেই হেরেছে। এবার শিরোপা জেতার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে যে এ সিরিজে দুইবার হারিয়ে আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে নিয়েছেন ক্রিকেটাররা।
২০০৯ সালে সর্বপ্রথম ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে জিম্বাবুইয়ে এবং শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে খেলে বাংলাদেশ। কিন্তু শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যায়। তিন বছর পর ২০১২ সালের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কাছে ২ রানে হেরে শিরোপা জিততে পারেনি বাংলাদেশ। শিরোপা জেতার এত কাছে গিয়েও তা ছুতে পারেনি দল। চার বছর পর আবার এশিয়া কাপ টি২০র ফাইনালে ভারতের কাছে হারে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে ফের জিম্বাবুইয়ে এবং শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে আবার শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বসে টাইগাররা। একই বছর শ্রীলঙ্কার মাটিতে নিদাহাস ট্রফিতে ভারতের কাছে শেষ বলে হেরে শিরোপা হারায় বাংলাদেশ। ২০১৮ সালেই এশিয়া কাপের ফাইনালেও ভারতের কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। শিরোপা জয়ের এত কাছে গিয়েও সেই শিরোপা ছোঁয়া হয়নি। এবার কী বাংলাদেশ শিরোপা জিতবে? সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ। অথচ সবার ভাবনা সেই ফাইনাল নিয়েই। এরপরও আজকের ম্যাচটির দিকেও দৃষ্টি থাকবে। কারণ ম্যাচটিতে যে ‘রিজার্ভ বেঞ্চে’র অনেকেই খেলবেন। তারা নিজেদের কতটা প্রস্তুত দাবি রেখে আয়ারল্যান্ডকে বিপাকে ফেলতে পারেন, সেদিকটিতে থাকছে নজর।