১০৭ প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি, ফেল নেই ২ হাজার ৫৮৩টিতে

34

কাজিরবাজার ডেস্ক :
এবার এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় ১০৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ কৃতকার্য না হতে পারলেও দুই হাজার ৫৮৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজনও অকৃতকার্য হয়নি। সারাদেশের ২৮ হাজার ৬৭৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০ থেকে ১০০ ভাগ পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে ২৪ হাজার ২৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে এবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ২ হাজার ২৭৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩২টিতে কেউ পাস করেনি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ৯ হাজার ১২৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেনি।
তবে তুলনামূলকভাবে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে শতভাগ ফেলের হার কম। সারাদেশে পাঁচটি স্কুলের কেউ পাস করতে পারেনি। ঢাকা, কুমিল্লা এবং চট্টগ্রাম বিভাগে শতভাগ অকৃতকার্য হওয়া কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। যশোর বিভাগে এ ধরনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ফল প্রকাশের পর যশোরের শতভাগ অকৃতকার্যের তালিকায় থাকা শড়াতলা গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা উম্মে সালমা রনির কাছে ফল বিপর্যয়ের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এখানে তিনজন শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে যাদের দুজন আবার অসুস্থতার কারণে পরীক্ষাতে অংশ নিতে পারেননি। যে একজন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সেও দুবার পরীক্ষার মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। আমরা যে আশঙ্কা করেছিলাম তাই ঠিক হয়েছে। এবার এখান থেকে কেই পাস করতে পারেনি। গতবার কজন পাস করেছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতবার আমাদের ফল খুব ভাল হয়েছিল। যা পরীক্ষার্থী ছিল তাদের সবাই পাস করেছিল। শতভাগ পাস করেছিল। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কজন ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, দু’জন ছিল। এর আগের বছর কতজন ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা মনে নেই। সালমা বলেন, আমাদের এখানেই এক কিলোমিটারের মধ্যে শড়াতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে তাদের ফল অনেক ভাল। সে স্কুলটি অনেক পুরাতন। এক কিলোমিটারের মধ্যে কেন আরও একটি নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন পড়লো জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, এটা তো শুধু মেয়েদের জন্য। নারীদের শিক্ষার জন্য ভাল তাই স্থাপন করা হয়েছে। ২০০১ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে তারা কোন বেতন ভাতা পান না, বেগার (বিনি পয়সার শ্রম দেয়া) খাটতে খাটতে শেষ। একটু ভাল করে প্রতিবেদনে তাদের স্কুলটির কথা তুলে ধরার অনুরোধ জানান তিনি।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ এবার পাস করেনি। জেলার পবা উপজেলার বাগসারা গার্লস হাইস্কুলের সব পরীক্ষার্থী এবার অকৃতকার্য হয়েছে।
এর বাইরে বরিশালের দুটি স্কুল এবং দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের একটি স্কুলে কেউ পাস করেনি। এর মধ্যে ভোলার চরফ্যাশন শশীভূষণ গার্লস হাইস্কুলের ৯ জনের ৯ জনই ফেল করেছে। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল জানান, তার স্কুলটি নিম্ন মাধ্যমিক। এবার তার বিএসসি এবং ইংরেজীর শিক্ষক চলে যাওয়াতে বিপাকে পড়েছেন। তার স্কুলের কোয়াটার কিলোমিটারের মধ্যেই আরও একটি স্কুল রয়েছে। সেই স্কুলটি থাকার পরও কেন আরও একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে হলো জানতে চাইলে বলেন, থানা সদরে একটি মেয়েদের স্কুল লাগে। এছাড়া চরগঙ্গা আদর্শ সেকেন্ডারি স্কুলের ৪৩ পরীক্ষার্থীর সকলে ফেল করেছেন। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আসমা বেগমকে কয়েক দফা ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
এবার শতভাগ পাসের তালিকায় রয়েছে ২ হাজার ৫৮৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ঢাকায় ১৪৬, রাজশাহীতে ৪৩১, কুমিল্লাতে ১৩২, যশোরে ২৭৫, চট্টগ্রামে ৩০, বরিশালে ৫০, সিলেটে ২২ ও দিনাজপুরে ১৩৮ স্কুলের সকলে পাস করেছে। এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ১ হাজার ২৬৩ এবং কারিগরি বোর্ডের ৯৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকলে পাস করেছে।