স্টাফ রিপোর্টার :
ঢেঁড়স ভাজিতে মরা মাছি, কাপ দইয়ের মধ্যে চুল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রির দায়ে কদমতলী পানসী রেস্টুরেন্টেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: জাহাঙ্গির আলম কদমতলী এলাকার চাঁদনীঘাট রোডে অবস্থিত পানসী রেস্টুরেন্টকে এ জরিমানা করেন।
এর আগে ২০ এপ্রিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের (অভিযোগ নং৩৬/২০১৯) করেন গোলাপগঞ্জ পৌর প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান চৌধুরী।
লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, পানসী রেস্টুরেন্টের বিজ্ঞাপনে ‘সুস্বাদু খাবারে আতিথেয়তার পরশ’ বাক্য লেখা রয়েছে। অভিযোগ দায়েরের ২ দিন পূর্বে ১৮ এপ্রিল রেস্টুরেন্টে ভাত খেতে গেলে ঢেঁড়স ভাজির মধ্যে মরা মাছি পাওয়া যায়। বিষয়টি তখন দায়িত্বরত ম্যানেজারকে অবহিত করার জন্য সার্ভিস বয়ের মাধ্যমে তাকে টেবিলে আসার অনুরোধ জানালেও ম্যানেজার না এসে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেন। যা বিজ্ঞাপনে প্রদর্শিত ‘সুস্বাদু খাবারে আতিথেয়তার পরশ’ বাক্যটি প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন বলে প্রতীয়মান হয়। এরপর একই রেস্টুরেন্টে কাপ দই অর্ডার (ওয়ানটাইম গ্লাস) করলে দেখা যায় দইয়ের মধ্যে প্রায় দেড় ইঞ্চি পরিমাণ লম্বা কালো চুল রয়েছে। এছাড়া দইয়ের লেভেলে যথাযথভাবে মূল্য, উৎপাদন ও মেয়াদোর্ত্তীণের তারিখ লেখা নেই। লেভেলে শুধুমাত্র সিল দিয়ে ইংরেজিতে ২০ এপ্রিল লেখা রয়েছে সাল অস্পষ্ট। এর মাধ্যমে দইয়ের মান সম্পর্কে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।
এসব অভিযোগের শুনানি গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়। এসময় পানসী রেস্টুরেন্টের পক্ষে শুনানিতে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলী হোসেন। তিনি অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে ধারণকৃত ভিডিও চিত্র দেখে প্রতিষ্ঠানের দোষ স্বীকার করেন এবং ভবিষ্যতে এরকম কাজ না করারও প্রতিশ্র“তি দেন।
শুনানি শেষে রায়ে পানসী রেস্টুরেন্টকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০১৯ এর ৪৩ ধারা অনুসারে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ না করলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে উক্ত আইনের ৭০(৫) ধারা অনুসারে ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৩৮৬ এর উপধারা (১) এর দফা (ক) এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী মালামাল ক্রোক ও বিক্রয়ের মাধ্যমে জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থসহ মোট জরিমানা আদায় করা হবে।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, নামকরা রেস্টুরেন্টের অনেক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা রয়েছে সচেতন নাগরিকরা অভিযোগ না করায় প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ এসব সংশোধন করেন না। এই রায় সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি উদাহরণ।
এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক মো. জাহাঙ্গির আলম বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অর্থ আদায় করার পর আইন অনুযায়ী ২৫ শতাংশ অর্থ অভিযোগকারীকে দেওয়া হবে।
পানসী রেস্টুরেন্টের পক্ষে শুনানিতে আসা আলী হোসেন জানান, জরিমানা পরিশোধের জন্য সময় নিয়েছি মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে আপীল করতে পারি।