স্টাফ রিপোর্টার :
গোলাপগঞ্জে মাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার দায়ে এক ছেলেকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে. এম. রাশেদুজ্জামান রাজা এ রায় প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা নাম- রুবেল আহমদ (২৪)। সে গোলাপগঞ্জ থানার দক্ষিণ বারকোট গ্রামের মৃত তখলিছ আলীর পুত্র। রায় ঘোষনার সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামী রুবেল আহমদ আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলো।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ঘটনার ৭/৮ বছর পূর্বে কাউকে কিছু না বলে রুবেল আহমদ বাড়ি থেকে কোথায় চলে যায়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি করে পাননি। ঘটনার ৩দিন আগে সে বাড়িতে মাঝে মধ্যে আসা-যাওয়া আরম্ব করে। কোন কিছু জিজ্ঞাসা করলে সে কাউকে কোন উত্তর দিতে চায় না। এমনকি পরিবারের কারো সাথে কোন কথাবার্তাও বলতো না। ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে রুবেল আহমদের মা হাওয়ারুন্নেছা (৭৫) ফজরের নামাজ পড়ে বসত ঘরের বারান্দায় একটি চেয়ারে বসেছিলেন। এমন সময় রুবেল বাড়িতে প্রবেশ করে ঘর থেকে দা এনে তার মাকে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। বৃদ্ধা মহিলা হাওয়ারুন্নেছার শোর চিৎকারে তার পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহত হাওয়ারুন্নেছার বড় ছেলে মনাই মিয়া বাদি হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় একমাত্র রুবেল আহমদকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং- ৪ (১২-০৪-১৭)।
পরে পুলিশ রুবেলকে গ্রেফতার করে সিলেট আদালতে সোপর্দ করে। এ সময় আসামী রুবেল বিচারিক হাকিম আদালতে ফৌজদারী আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে এবং জবানবন্দিতে আদালতকে সে জানায়, তাকে তার মা বিয়ে করাতে না দেয়ায় সে মা হাওয়ারুন্নেছাকে ‘দা’ দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ৮ জুন গোলাপঞ্জ থানার এসআই মাহবুবুর রহমান একমাত্র রুবেল আহমদকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ১৬ আগষ্ট থেকে এ মামলার বিচারকার্য শুরু করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানী ও ১৪ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী রুবেল আহমদকে ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে উল্লেখিত রায় প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে এডিশনাল পিপি এডভোকেট সামছুল ইসলাম ও আসামীপক্ষে স্টেট ডিফেন্স এডভোকেট ফারজানা হাবিব চৌধুরী মামলাটি পরিচালনা করেন।