সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ শিশু সন্তানের খুনীদের গ্রেফতার দাবি মায়ের

17
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন জালালাবাদ থানাধীন বড়গুল গ্রামের বাসিন্দা রেশমা বেগম।

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট সদর উপজেলার বড়গুল গ্রামের ১১ বছর বয়সী শিশু হৃদয় আহমেদের প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার করে ন্যায় বিচার দাবি করেছেন তার মা মোছাম্মাৎ রেশমা বেগম। তিনি তার ছেলে হত্যার ঘটনায় নিরপরাধ লোকদের হয়রানি না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জমি দখলের উদ্দেশ্যে বড়গুল গ্রামের মৃত শোয়াইবুর রহমানের ছেলে মঞ্জুরুল আলম শেমু (৪০) ও মতিন মিয়া গং তাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করতে চায়। এর জেরে তাদের নির্দেশে গত বছরের ১ জুলাই এলাকার সন্ত্রাসী হেলাল মিয়া (৩৬), খালিক মিয়া (৪৫), মনির মিয়া (৪০) আমার ছেলে হ্নদয় আহমেদকে মারধর করে হাত ভেঙ্গে দেয়। এই ঘটনায় জালালাবাদ থানায় একটি মামলা দায়ের করলে শেমু গং মামলা তুলে নিতে চাপ দেয় অন্যথায় আমার ছেলেকে হত্যার হুমকি দেয়। আমি প্রাণ ভয়ে জালালাবাদ থানায় আরও একটি জিডি (নং ১০৩, তাং ০৩/০৭/২০১৮ ইং) করি। জিডির পর সন্ত্রাসী গোষ্ঠি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা আমাকে বাড়ী ছাড়া করার জন্য এমন কোন চেষ্টা বাকি রাখেনি। এমতাবস্বায় আমি নিরুপায় হয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর আমি ও আমার ছেলের জীবনের নিরাপত্তার জন্য আবেদন করি। এরপর ১৩ জুলাই আমার ছেলে হৃদয় নিখোঁজ হয়। এর একদিন পর বড়গুল শে^ত শাহ এর মাজারের উত্তর পাশের ছড়ায় আমার ছেলের লাশ পাওয়া যায়।’
তিনি দাবি করে বলেন, ‘শেমু, মনির, হেলাল, খালিক গংরা আমার নাড়ীছেড়া ধনকে নির্মমভাবে খুন করে। আমার ছেলে খুনের ২দিন আগে থেকে হেলালের ভাতিজা সোহেল আমার বাসা যাওয়ার পথে হোটেলে বসে আমি ও আমার ছেলেকে ফলো করে। আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার আগের দিনও সোহেল এই হোটেলে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলো যা আমি নিজ চোখে দেখেছি। আমার ছেলে খুনের পর থেকে সোহেল পলাতক রয়েছে। এই ঘটনায় এসএমপির বিমানবন্দর থানায় উপরে উল্লেখিতদের বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলা নং ১৭, তারিখ ১৪/০৭/২০১৮ ইং। এই মামলা তদন্ত করেন বিমানবন্দর থানার এসআই মো. আব্দুস সত্তার। কিন্তু দু:খের বিষয় আমার ছেলে হত্যাকারীদের পুলিশ গ্রেফতার না করে উল্টো এজহারনামীয় আসামীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এবং খুনীদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতে থাকেন।’
পরবর্তীতে বিষয়টি আমি জানতে পেরে উপ-পুলিশ কমিশনার (্উত্তর) এর কাছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য লিখিত আবেদন করি। এরই প্রেক্ষিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরির্বতন হয়ে মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর হয়। তবে পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তাও নানাভাবে আসল খুনিদের মামলা থেকে বাদ দিতে চেষ্টা করছেন। রেশমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, পিবিআইয়ের অফিসে এনে তাকে মানষিক নির্যাতন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তাকে চাপ দেন এলাকার সুজন মিয়া ও আল-আমিন হোসাইনকে ছেলে খুনের ঘটনায় জড়িত করতে।
তিনি বলেন, আমার ছেলের প্রকৃত খুনি শেমু চৌধুরী, হেলাল, মনির, খালিক, মতিন গংরা ছেলেকে খুনের পর আমাকেও নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত নানা ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে যাতে আমি নিরপরাধ লোকদের ফাসিয়ে দেই এবং তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন আদালতে করি।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে তার ছেলের প্রকৃত খুনীদের গ্রেফতার ও ন্যায় বিচার চান। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতাও চেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রেশমা বেগমের মা আফতেরা বেগম, জিতু মিয়া, ইসলাম উদ্দিন, আবুল হোসেন।