স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল থেকে সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, জালালাবাদ গ্যাস, র্যাব-পুলিশ মিলে অভিযান চালানো হয়। মোবাইল কোর্টের এ অভিযানে রবিবার ৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এর আগে শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্টের অভিযান চালিয়ে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রয়কারী দুটি প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রবিবার সকাল ১০টায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে নগরীর বন্দরবাজার ও ধোপাদীঘিরপার এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
এ সময় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স না থাকা, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় ক্রটি ও নি¤œ মানের গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয়ের দায়ে কয়েকটি দোকানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
অভিযানে বন্দরবাজারের মাখন মিয়া সাইকেল মাট ও চুলা ঘরকে ১০ হাজার টাকা, প্রত্যাশী চুলা ঘর ১০ হাজার টাকা, সেবা ডেকর ওয়াল্ড ১০ হাজার টাকা, দি গার্ডেন রেস্টুরেন্ট ১০ হাজার টাকা ও ধোপাদীঘিরপারস্থ মেসার্স শহীদ মটরসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানকালে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, চরম অব্যবস্থাপনায় নগরীতে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই নির্দ্বিধায় চলছে এ ব্যবসা। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন। তিনি বলেন, একটি নিরাপদ স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা সরিয়ে নিতে হবে। জনসাধারণের চলাচল ও আবাসিক এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা বেআইনী।
অভিযানে অংশ নেওয়া বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর অনুযায়ী এলপি গ্যাস রুলস ২০০৪-এর ৬৯ ধারার ২ বিধিতে লাইসেন্স ব্যতীত কোন ক্ষেত্রে এলপিজি মজুদ করা যাবে তা উল্লেখ আছে। একই বিধির ৭১নং ধারায় বলা আছে, আগুন নেভানোর জন্য স্থাপনা বা মজুদাগারে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে। এ আইন অমান্য করলে ওই ব্যবসায়ী ন্যূনতম দু’বছর এবং অনধিক ৫ বছরের জেল এবং অনধিক ৫০ হাজার টাকার অর্থদন্ডে-দন্ডিত হবেন এবং অর্থ অনাদায়ী থাকলে অতিরিক্ত আরো ৬ মাস পর্যন্ত কারাদন্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এ আইন না মেনে নির্দিধায় চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের ব্যবসা।
অভিযানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ছাড়াও সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সচিব নুর আজিজুর রহমান, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী, মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইসমাইল, ফায়ার সার্ভিস সিলেটের উপ পরিচালক দিনমনি শর্মা, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সহকারী ইন্সপেক্টর মো. আলীম উদ্দিন, জালালাবাদ গ্যাসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার নগরীর বাগবাড়ি এলাকায় একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দু’জন আহত হওয়ার পর পরদিন শনিবার দুপুরে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আনতে মোবাইল কোর্টের অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়।