শাবি থেকে সংবাদদাতা :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিকে গভীর রাতে হল থেকে বিতাড়নের চেষ্টা চালিয়েছে ছাত্রলীগেরই আরেকটি পক্ষ। এ সময় শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হন বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো: রুহুল আমীন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে আকস্মাৎ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শাহপরান হলের সি ব্লকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমীন ও তার অনুসারীদের উপর চড়াও হয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুন্ময় দাস ঝুটনের অনুসারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০২২ নম্বর কক্ষে রুহুল ও ঝুটনের অনুসারীরা ভাগাভাগি করে বসবাস করতো। মঙ্গলবার রাতে ওই কক্ষ দখলে নিতে চাইলে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে রাত ১ টার দিকে ঝুটনের অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শাহপরান হলের সি ব্লকের ২২৬ নম্বর কক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমীনকে বের করার চেষ্টা করলে রুহুল নিজে কক্ষ থেকে বের হয়ে নীচে চলে যান। এ সময় ঝুটনের অনুসারীরা টেনে হিঁচড়ে তাঁকে সি ব্লক থেকে বি ব্লকের নীচে নিয়ে যায়।
ঘটনা সামাল দিতে রাত দুইটার দিকে হলে আসেন প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিজানুর রহামান। এ সময় আবাসিক হলের সামনে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়। রাতে হল প্রভোস্ট, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান সহ নেতাকর্মীরা বসে উত্তেজনা তাৎক্ষণিক প্রশমনের চেষ্টা চালান।
এদিকে গত মঙ্গলবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শাবি ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে সমালোচনা করেন। তিনি ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল, অস্ত্রের মহড়া ও মারামারি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন এবং এসব কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে ঘোষণা দেন। উপাচার্যের এমন বক্তব্যের ১৪ ঘন্টা অতিক্রম না হতেই আবারো সংঘর্ষে লিপ্ত হলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মৃন্ময় দাস ঝুটন বলেন, ঘটনার সময় আমি আমার বাসায় ছিলাম। পরবর্তীতে শুনেছি, বঙ্গবন্ধু হলের ৪০২২ নম্বর কক্ষে আমাদের এক কর্মীকে বের করে দিয়ে সভাপতি তার কর্মীকে কক্ষে উঠিয়েছেন। এ সময় সভাপতির বেশ কিছু অনুসারী বঙ্গবন্ধু হলে হামলা করতে গেলে উত্তেজনা শুরু হয়।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমীন উল্টো অভিযোগ করে বলেন, ঝুটনের নির্দেশে আবুল হাসান মোল্লা, রাকিব, সাইদুর রহমান, সিফাত ও অভির নেতৃত্বে ২০-২৫ জন বঙ্গবন্ধু হলের ৪০২২ নম্বর কক্ষে অবস্থানরত আতিক খান মুন্নাকে হল থেকে বের করার চেষ্টা চালায়। মুন্নাকে বের করতে না পেরে তারা শাহপরান হলে এসে তান্ডব চালায়। তবে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
শাহপরান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, গতরাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের ঝামেলার খবর শুনে রাত দ্্ুইটার দিকে আমি হলে আসি। পুলিশকে খবর দিলে পুলিশও ঘটনাস্থলে আসে। তাৎক্ষণিকভাবে সকলের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। আপাতত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।