কাজিরবাজার ডেস্ক :
মুজিববর্ষে ‘গবর্নমেন্ট জব পোর্টাল ওপেন’ হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ চাকরির জন্য একটি ‘পোর্টাল’ তৈরি করেছে, থাকবে সরকারের বিভিন্ন দফতরের চাকরির খবর। যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি প্রার্থীরা এখানে আবেদন জমা দেবেন। আবেদন অনুযায়ী পোর্টাল থেকে প্রার্থীদের বাছাই করে নেবে সরকারের বিভিন্ন দফতর। তখন আর শিক্ষিত যুবকদের চাকরির জন্য মামা খালু চাচা বা রাজনৈতিক নেতার দুয়ারে ছুটতে হবে না। বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছা ছিল দেশের সব শিক্ষা অবৈতনিক করা। কিন্তু ওই ঘোষণা দেয়ার আগেই তাকে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়। ‘জব পোর্টাল’ বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করা হবে। তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে শিক্ষিত বেকার যুবকদের চাকরির জন্য নানা দফতরে আবেদন করতে চরম ভোগান্তিও পোহাতে হয়। শিক্ষিত যুবকদের যাতে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে না হয় তার জন্য তৈরি করা হচ্ছে গবর্নমেন্ট জব পোর্টাল। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে কাজ করছে, কিভাবে শিক্ষিত বেকার যুবকদের চাকরির জন্য একটি স্বতন্ত্র পোর্টাল তৈরি করা যায়। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এমন একটি পোর্টাল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। যা মুজিববর্ষকে কেন্দ্র করে সবার জন্য খুলে দেয়া হবে। দেশে কতসংখ্যক চাকরি প্রার্থী রয়েছেন তার একটি তালিকা থাকবে ওই পোর্টালে। চাকরি প্রার্থীদের তালিকা এই পোর্টালে থাকলে সহজেই সরকারের নজরে আসবে। এখান থেকেই শিক্ষিত যুবকদের পর্যায়ক্রমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।
পলক বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পর ২১ বছর এ দেশকের উল্টো পথে চালানো হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নতির শিখরে। এখন কোন শিক্ষার্থীকে আর টাকার জন্য লেখাপড়া বন্ধ করতে হয় না। শিক্ষার্থীদের ভাল ফলের দিকে মনোনিবেশ না করে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বাবা মা ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার কথাও বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সরকার অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন পরিকল্পনায় রূপকল্প ’২১ বাস্তবায়নে চারটি স্তম্ভ বা পিলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে মানবসম্পদ উন্নয়ন, ইন্টানেটের সংযোগ দেয়া, ই-গবর্নেন্স ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প খাত গড়ে তোলা। এই চারটি মূল স্তম্ভের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশকে দাঁড় করানো হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। গত দশ বছরে আইসিটি খাতে দশ লাখ জনবলের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামী ৪ বছরে আরও দশ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। গত দশ বছর আগে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৫ মিলিয়ন। ইন্টারনেটের দাম বেশি হওয়া মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারত না। বর্তমান সরকার দাম কমিয়ে মানুষের নাগালের মধ্যে আনা হয়েছে। সারাদেশে হাইস্পিড ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপন করা হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা বেড়ে প্রায় সাড়ে ১০ কোটিতে পৌঁছেছে। ৬০ মিলিয়ন মানুষকে প্রযুক্তি সহায়তা দেয়া হচ্ছে। বিগত ১০ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আমরা অনেক এগিয়েছি। আমাদের আরও শেখার রয়েছে, শিখতে চাই। এ বিষয়ে আমরা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে দাতাসংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের দেশসমূহের সঙ্গে যৌথপর্যায়ে কাজ করতে ইচ্ছুক।