ছাতকে দু’পক্ষের পৃথক সংঘর্ষে আহত ৭০

87

ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকে পৃথক দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৭০ জন ব্যক্তি আহত হয়েছে। গুরুতর আহত প্রায় ১৬ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ও রাতে উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের কালিপুর-খাসগাঁও গ্রামবাসী এবং কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তিরগাঁও গ্রামের দু’পক্ষের মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছবি পোষ্ট করাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ১৬ জনকে ভর্তি করা হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের খাসগাঁও বাজার এলাকায় কালীপুর ও খাসগাঁও গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইউনিয়নের নির্বাচিত দু’ ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় খাসগাঁও বাজারে কালীপুর গ্রামের নূর উদ্দিনের পুত্র ইউপি সদস্য আজিজুল হক শান্ত ও খাসগাঁও গ্রামের মাফিজ আলীর পুত্র ইউপি সদস্য করম আলীর উপস্থিতিতে জনৈক এক স্কুল ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা নিষ্পত্তির জন্য সালিশ-বৈঠক চলছিল। সালিশ-বৈঠক চলাকালে সালিশ-বৈঠকের ধারণকৃত একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কে বা কারা পোষ্ট করে দেয়। সালিশ-বৈঠক শেষে ভিডিও চিত্র ফেইস বুকে পোষ্ট করার বিষয়ে ইউপি সদস্য আজিজুল হক শান্ত আত্মীয় রুহুল আমিনকে দায়ী করে ইউপি সদস্য করম আলী পক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক-বিতন্ডা ও হাতা-হাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে দু’ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে কালীপুর ও খাসগাঁও গ্রামবাসী তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে লাঠি-সোটা, দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল ব্যবহার করা হয়। প্রায় আধঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে প্রায় ৩০ ব্যক্তি আহত হয়। গুরুতর আহত কলমধর আলী (৫৮), ময়না মিয়া (৫০), আবদুল হালিম (৬৫), জুয়েল মিয়া (২০), ছালেক উদ্দিন (৬০), সাবুল মিয়া (৪০), শ্যামল চন্দ (২৫), আমিনুল ইসলাম (৩০), ফেদৌস (২৮), আদম আলী (২৫), পারভেজ (১৫), নুর উদ্দিন (৫০), সাইদ মিয়া (৬৫), মহর আলী (২৬), ফজর আলী (৫৫) কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের কৈতক হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
অপর দিকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তিরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল হক ও একই গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার পুত্র সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মতিন পক্ষদ্বয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী দফায়-দফায় সংঘর্ষে নারিসহ প্রায় ৪০ ব্যক্তি আহত হয়। গুরুর আহত সাইদুল ইসলাম (১৮)কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল হক ও সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মতিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সোমবার রাতে আবদুল মতিনের চাচাতো ভাই সিরাজ মিয়া ছাতক শহর থেকে অটো-টেম্পু যোগে বাড়ি ফিরছিল। পথে টেম্পুটির যান্ত্রিক ত্র“টি দেখা দিলে চালক নজরুল হকের ভাতিজা মঈন উদ্দিন যাত্রীদের বাকী পথ পায়ে হেটে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এ নিয়ে যাত্রী সিরাজ মিয়ার সাথে চালক মঈন উদ্দিনের বাক বিতন্ডা ও হাতা-হাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে উভয় পক্ষের লোকজন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে ওয়াসিম মিয়া (২৮), রহমত আলী (২২), মিছবাহ মিয়া (৩৫), আক্তার হোসেন (১৮), মুন্না (১৬), বুলবুল আহমদ (১৭), রেজওয়ান (১৫), রুহেল মিয়া (২১), জাবেদ (২২), পারভেজ (২৪), জসিম উদ্দিন (২৩), শেখ মনি (২৪), হাবিবুবর রহমান (২০), তারেক আহমদ (২৫), সায়েম (১৯), শফর আলী (৩৫), নুর আহমদ (২৪), ইজাজুল হক (৪৫)সহ অন্যান্য আহতদের ছাতকসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।