গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
গোলাপগঞ্জে পুলিশকে চাঁদা না দেয়ায় দুই পিক’আপ শ্রমিকের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে লাঠিপেটা করেছে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় উত্তেজিত শ্রমিকরা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক প্রায় ৪ ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। স্থানীয় ও নির্যাতনের শিকার শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে জানা যায় মঙ্গলবার সকাল ১১টায় নাছির উদ্দিন (৪৫) নামে এক শ্রমিক সিলেট মেট্রো ন-১১-০৩৯৮ নাম্বারের মাল বোজাই মিনি ট্রাক (পিক’আপ) নিয়ে সিলেট থেকে জকিগঞ্জের উদ্দেশ্য রওয়ানা হন। গোলাপগঞ্জ উপজেলার ড্রীমল্যান্ড পার্ক গেইট এলাকায় পৌছা মাত্র গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশের একজন সদস্য ওই পিক’আপ আটক করেন। এ সময় ট্রাফিকের এটিএসআই তাহের ওই গাড়ীর কাগজপত্র দেখেন। এসময় এটিএসআই তাহের বলেন নির্বাচনের ডিউটি করবেন না ১হাজার টাকা দেবেন। সে জানায় আমার পুলিশ ডিউটির কাগজ আছে। পরে চালক পুলিশ ডিউটির কাগজ দেওয়ার পর তিনি ছিঁড়ে ফেলে ৫০০ টাকা দাবী করেন। এরপরও ওই শ্রমিক টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ সময় আহত জাবেদ আহমদ (৩৫) নামে অপর পিক’আপ শ্রমিক পুলিশ ডিউটির কাগজ ছিঁড়ে ফেলা ও টাকা চাওয়ার জন্য প্রতিবাদ করলে অন্যান্য পুলিশের সহযোগিতায় এসআই শংকর চন্দ্র দেব তাদের দু’হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে লাঠিপেটা করেন। ওই দুই চালকের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় পিক’আপ চালক শাহপরান থানার কল্লোগ্রামের মেহের আলীর ছেলে রুমেল আহমদ (৪০) কেও নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে উপজেলার ট্রাক, মিনি ট্রাক ও পরিবহন শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। দুপুর ২টায় পুলিশ শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ারও ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের হামলায় আরো কয়েকজন শ্রমিকসহ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অনেক পথচারী আহত হন। স্থানীয় এক যুবক এ ঘটনার দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে দেখে পুলিশ মোবাইলটি কেড়ে নেয়। সকাল ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সিলেট জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
গোলাপগঞ্জ থানা ট্রাক, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহেল আহমদ বলেন, ওসি সাহেব দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার খরচ পাইয়ে দেওয়ার আশ^াস দিলে আমরা অবরোধ প্রত্যাহার করি।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন পিক’আপ শ্রমিক সিলেট নগরীর পশ্চিম পীরমহল্লা গ্রামের মৃত আফরোজ আলীর ছেলে নাছির উদ্দিন (৪৫) ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার রণকেলী গ্রামের মৃত তুতু মিয়ার ছেলে জাবেদ আহমদ, শাহপরান থানার কল্লোগ্রামের মেহের উদ্দিনের ছেলে রুমেল আহমদ (৪০)। বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে গোলাপগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী থানার ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলী দোষিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার খরচ পাইয়ে দেওয়ার আশ^াস দিলে শ্রমিক নেতারা অবরোধ তুলে নেন। ৪ ঘন্টা সড়ক অবরোধের কারণে যাত্রিবাহী শতশত যানবাহন ও হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হন। ঘটনাটি জানার পর অনেক যাত্রীরাও পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, শ্রমিকদের সাথে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিকাল সাড়ে ৩টায় শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিয়েছে।