দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসতে হবে -দুদক কমিশনার

57

ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু সংখ্যক লোকের কারণে দেশের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে এসে সরকারি সকল সেবা জনগণের জন্য নিশ্চিত করতে হবে। দেশে বিদ্যুৎ, ভূমি, স্বাস্থ্যখ্যাতে চরম অনিয়ম, টিআর-কাবিখায় লুটপাট চলছে। এসব দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে এসে সব ধরণের দুর্নীতিকে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ি জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসতে হবে। মঙ্গলবার ছাতক অডিটোরিয়ামে সরকারি অফিস সমূহে সেবা ও সুবিধাদি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উদ্ভুত সমস্যা শ্রবণ ও নিষ্পত্তি, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতামূলক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ছাতকে দুদকের দিনভর গণশুনানী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
জেলা প্রসাশক মোহাম্মদ আবদুল আহাদের সভাপতিত্বে ও সিলেট বিভাগীয় দুদক কার্যালয়ের পরিচালক আবদুল্লাহ আল জাহিদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, দুদকের পরিচালক (প্রতিরোধ) মনিরুজ্জামান, ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেগম আবেদা আফসারি, সহকারি কমিশনার (ভুমি) সোনিয়া সুলতানা। পরে আদালতের আদলে গণশুনানী করেন, দুর্নীতিদমন কমিশনের কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম। সাথে ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ, পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহ খাঁন।
গণশুনানীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়মের উপর অভিযোগ তুলেন, শাহ জাহান মিয়া, ইশাদ আলী ও হিফজুল বারি শিমুল। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রাজিব চক্রবর্তী এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে না পারায় গণশুনানী থেকে তার বদলীর ঘোষণা প্রদান করেন দুদক কমিশনার। সহকারি কমিশনার (ভুমি) অফিসের বিরুদ্ধে অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগ উত্থাপন করেন, রোকন উদ্দিন, মানিক মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, মাস্টার নুরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা শুকুর আলী, ডা. আফসার উদ্দিন ও আতাউর রহমান। শুকুর আলীর ভুমি সংক্রান্ত আনীত অভিযোগ তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি করা হয়েছে। অন্যান্য অভিযোগ এক সপ্তাহের মধ্যে শুনানী করে নিষ্পত্তির নির্দেশ প্রদান করা হয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা অজয় ঘোষের আনীত অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিরুদ্ধে আবদুল ওয়াদুদের অভিযোগ, মৎস্য কার্যালয়ের বিরুদ্ধে অজয় ঘোষ ও ফজর উদ্দিনের অভিযোগ, প্রানী সম্পদ কার্যালয়ের বিরুদ্ধে সুজিত পালের অভিযোগ, উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের বিরুদ্ধে সাকির আমিনের আনীত আভিযোগ প্রমানিত হয়নি।
মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের বিরুদ্ধে আবদুল জব্বার, উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে লাল মিয়া, পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিবি’র বিরুদ্ধে আপ্তাব উদ্দিন ও আবদুল জব্বারের দেয়া অভিযোগ স্বল্প সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ প্রদান করা হয়। ছাতক থানার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা শুকুর আলী ও ছালিক মিয়ার আনীত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের বিরুদ্ধে ডা. আফসার উদ্দিন, সোলেমান আলী ও সৈয়দ লাল মিয়ার আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগন বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করবেন বলে গণশুনানীতে জানানো হয়। উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার ও সহকারি কমিশনার (ভুমি)’র কার্যালয়ে আমি দুর্নীতি মুক্ত ও আমার অফিস দুর্নীতিমুক্ত লিখা সাইনবোর্ড টানিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) সোনিয়া সুলতানা ও সাব রেজিস্ট্রার আবদুল করিম ধলা মিয়া। গণশুনানীতে সহকারি সিনিয়র পুলিশ সুপার দুলন মিয়া, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার খান ছানা, জেলা পরিষদ সদস্য আজমল হোসেন সজল, ইউপি চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান, আবুল হাসনাত, সোনালী ব্যাংক ছাতক শাখার ম্যানেজার আবদুল জলিল, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খাঁন, খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহাব উদ্দিন, ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর আহসান হাবীব, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি নুরুর রব চৌধুরি, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ফয়জুল ইসলামসহ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাকির আমিন রাজাকার পুত্র উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে দুদক কমিশনারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও ইউনিয়নের দিঘলী চাকলপাড়া গ্রামের মৃত তাছির উল্লার পুত্র রইছ আলী।