কাজিরবাজার ডেস্ক :
দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের পর পাইলট-ক্রুসহ যাত্রীরা নিরাপদে অবতরণ করেছেন। তবে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটকের পর অস্ত্রধারী যুবক মারা গেছেন। বিমানবন্দরে এখন স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। এই ঘটনায় বিমানটির কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
রবিবার রাত ৯টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের জিওসি এস এম মতিউর রহমান।
এর আগে সন্দেহভাজন অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীকে ধরতে কমান্ডো অভিযান পরিচালিত হয়। সেখানে সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর সঙ্গে র্যাব-পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থাও যোগ দেয়।
ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দুবাইগামী বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি এক অস্ত্রধারী ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। রবিবার বিকাল ৫টা ৪১ মিনিটের দিকে ‘ময়ুরপঙ্খী’ উড়োজাহাজটি চট্টগ্রামে জরুরি অবতরণ করে। পাইলট-ক্রুসহ বিমানে থাকা ১৪২ যাত্রী নিরাপদে নেমে আসেন। পরে অস্ত্রধারীকে ধরতে চালানো হয় অভিযান।
প্রায় দুই ঘণ্টার কমান্ডো অভিযান শেষে চট্টগ্রামের জিওসি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে তিন বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জিওসি এস এম মতিউর রহমান জানান, ছয়টার দিকে খবর পাওয়ার পরপরই তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযানে নামেন।সন্দেহভাজন অস্ত্রধারী নিজেকে মাহদী নামে পরিচয় দেন। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
জিওসি জানান, অভিযানের শুরুতে তাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। তবে ২৫/২৬ বছর বয়সী সেই যুবক তাতে সাড়া না দিয়ে গুলি চালান। কমান্ডোরা পাল্টা গুলি চালালে তিনি আহত হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে তার মৃত্যু হয়।
ওই যুবক কেন এই ঘটনা ঘটালেন এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিওসি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে তার কাছ থেকে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে পাইলটকে পিস্তল ঠেকিয়ে ওই যুবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়ার দাবি করেন। এছাড়া তিনি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলতে চান। তবে পাইলট বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কৌশলে তাকে কথোপকথনে ব্যস্ত রেখে বিমানটি জরুরি অবতরণে সক্ষম হন।
পাইলট জানিয়েছেন, ওই যুবক অস্ত্র ঠেকালেও তার কোনো ক্ষতি করতে চাননি। ভালো আচরণই করেছেন।
জিওসি জানান, এই কমান্ডো অভিযানে অত্যন্ত দক্ষ সদস্যরা অংশ নেন। ঢাকার হলি আর্টিজানে যারা অভিযান চালিয়েছিলেন তারা এখানেও অভিযান চালান। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় খুব অল্প সময়ে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে অভিযান সম্পন্ন করা গেছে বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা।