গোলাপগঞ্জে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যুবকের দুটি চোখ নষ্ট করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

110
গোলাপগঞ্জে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত জায়েদ (বামে) ও আটক হওয়া প্রধান আসামী (ডানে)।

সেলিম হাসান কাওছার গোলাপগঞ্জ থেকে :
গোলাপগঞ্জে জায়েদ আহমদ (২২) নামে স্থানীয় এক ফুটবলারকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে দুটি চোখ নষ্ট করে দিয়েছে সন্ত্রাসী হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে সে দু’চোখ হারিয়ে সিলেট ওসামানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এ ঘটনার মূল হোতা উপজেলার বাঘা ইউপির রস্তমপুর গ্রামের ইছাক আলীর ছেলে রাইয়ুম উরফে ছানু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামী একজন চোরাই হুন্ডি ব্যবসায়ী। বাঘা ইউপির দৌলতপুর গ্রামের বাছই মিয়ার ছেলে আহত জায়েদ আহমদ ও একই গ্রামের সহির উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের আহমদ হুন্ডি ব্যবসায়ী ছানু মিয়ার দলে কাজ করতো। কিছুদিন থেকে হুন্ডি ব্যবসার টাকা নিয়ে ছানু মিয়ার সাথে জায়েদের মনোমালিন্যতা চলছিল।
গত শনিবার (৯ ফেব্রয়ারী) সন্ধ্যা ৬টায় ছানু মিয়া জরুরী কথা আছে বলে আহত জায়েদকে তার বাড়ীতে ডেকে নেয়। সেখানে যাওয়ার পর তার সাথে ভাল আচরণ করা হয়। রাত ১১টায় ৭/৮জন অজ্ঞাত লোক হুন্ডি ব্যবসায়ী ছানু মিয়ার বাড়ীতে পৌছেন। এ সময় ছানু মিয়ার বড় ভাই হাছন আলী (৫৫) ও ছেলে সাইদুল ইসলাম (২৫)সহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী লোকজনের সহযোগিতায় জায়েদকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্য হাত-পা বেঁেধ চোখে চুনা লাগিয়ে লোহার রড, জিআই পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারপিট শুরু করা হয়। এক পর্যায়ে জায়েদকে বস্তাবন্দী করে সুরমা নদীতে ফেলে দেওয়ার জন্য রওয়ানা হলে তার আর্ত চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসামানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার জ্ঞান ফিরলেও দুটি চোখে আর আলো জ¦লেনি। কর্তব্যরত ডাক্তাররা বলছেন চোখে চুন জমে থাকার কারণে তার দুটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। আহত জায়েদের জ্ঞান ফেরার পর স্বজনদের জানায়, তার চোখে চুনা লাগিয়ে কাপড় দিয়ে বেঁধে মারপিট শুরু করা হয়। এ সময় তারা হাত-পাও বেঁধে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় গতকাল রবিবার (১০ ফেব্র“য়ারী) জায়েদের বাবা বাছন মিয়া (৬০) বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রধান আসামী করে প্রাণে হত্যার চেষ্টা আইনে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় ছানুর বড় ভাই হাছন আলী ও তাদের ভাতিজা সাইদুল ইসলামসহ অজ্ঞাত আরো ৭/৮জনকে আসামী করা হয়। মামলা নং-৪।
তবে ঘটনার দিন রাতেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগীতায় ওই মামলার প্রধান আসামী রাইয়ুম উরফে ছানু মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গতকাল রবিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। স্থানীয়রা জানান, আহত জুবায়ের আহমদ স্থানীয় একজন ভাল ফুটবলার। দরিদ্র পরিবারের ছেলে। এদিকে এ ঘটনায় বাঘা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের লোকজন এ ঘটনার জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ওই ঘটনার প্রধান আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অন্যান্য আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।