শেষ ওভারের উত্তেজনায় ঢাকাকে হারাল চট্টগ্রাম

45

স্পোর্টস ডেস্ক :
শেষ ওভারের উত্তেজনায় সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারাল মুশফিকুর রহিমের চিটাগং ভাইকিংস। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সোমবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুশফিকরা জয় পেয়েছে তিন উইকেটে। ছয় ম্যাচে চট্টগ্রামের এটি পঞ্চম জয়। ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে এখন তারা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, সাত ম্যাচ খেলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে ঢাকা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ঢাকা ডায়নামাইটসের দেয়া ১৪০ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৯.৫ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় চট্টগ্রাম। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন মোসাদ্দেক হোসেন। ১২ বলে ৩০ রান করেন ক্যামেরন দেলপোর্ট। ১০ বলে তিন ছক্কার সাহায্যে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক। ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান চার ওভারে ১৬ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন। একটি ওভার মেডেন করেন তিনি। এছাড়া আন্দ্রে রাসেল ১টি ও রুবেল হোসেন ১টি করে উইকেট নেন।
ইনিংসের শেষ ওভারে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। হাতে ছিল তিন উইকেট। ক্রিজে ছিলেন ফ্রাইলিঙ্ক ও সানজামুল ইসলাম। বোলিংয়ে ছিলেন মোহর শেখ। ওভারের প্রথম বল থেকে সিঙ্গেল নেন সানজামুল। দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকান ফ্রাইলিঙ্ক। তৃতীয় বল থেকে দুই রান নেন তিনি। এরপর চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
দলীয় শূন্য রানেই প্রথম উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। আন্দ্রে রাসেলের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে ডাইভ দিয়ে দুর্দান্ত একটি ক্যাচ নেন শুভাগত। ফিরে যান মোহাম্মদ শাহজাদ। চতুর্থ ওভারে সাকিবের ঘূর্ণিতে বোল্ড হন দেলপোর্ট। ১২ বলে চারটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৩০ রান করেন তিনি। ষষ্ঠ ওভারে সাকিবের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইয়াসির। অষ্টম ওভারে দাসুন শানাকাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন সাকিব।
অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ফেরেন ২৩ বলে ২২ রান করে। ১৪তম ওভারে রুবেল হোসেনের বলে ছক্কা হাঁকাতে চেয়েছিলেন মুশফিক। কিন্তু বলটি গিয়ে জমা পড়ে নারিনের হাতে। ১৭তম ওভারে মেডেনসহ এক উইকেট নেন সাকিব। ওভারের পঞ্চম বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন নাঈম হাসান। ১৯তম ওভারে রান আউট হয়ে যান মোসাদ্দেক হোসেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৯ রান সংগ্রহ করে ঢাকা ডায়নামাইটস। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ১৫ বলে ২৮ রান করেন শুভাগত হোম। ১৮ বলে ২৭ রান করেন নুরুল হাসান সোহান। চিটাগংয়ের বোলারদের মধ্যে ক্যামেরন দেলপোর্ট ৩টি, রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ২টি, আবু জায়েদ রাহি ২টি ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই ওপেনিং জুটি ভাঙে ঢাকার। ওভারের তৃতীয় বলে রনি তালুকদারকে বোল্ড করেন ফ্রাইলিঙ্ক। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে অপর ওপেনার সুনিল নারিনকেও বোল্ড করেন ফ্রাইলিঙ্ক। নবম ওভারে দুই উইকেট নেন পেসার আবু জায়েদ রাহি। ওভারের তৃতীয় বলে হেইনো কুনের স্ট্যাম্প গুঁড়িয়ে দেন তিনি। শেষ বলে দেলপোর্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডারউইশ রাসুলি।
১৫তম ওভারে সাকিব ও নুরুলকে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান দেলপোর্ট। ওভারের দ্বিতীয় বলে ইয়াসির আলীর হাতে ধরা পড়েন সাকিব। শেষ বলে স্ট্যাম্পিং হন নুরুল। এর পরের ওভারেই দাসুন শানাকার হাতে ক্যাচ বানিয়ে আন্দ্রে রাসেলকে আউট করেন খালেদ আহমেদ। ১৯তম ওভারে নাঈমকে বোল্ড করেন দেলপোর্ট। ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হন শুভাগত হোম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৩ উইকেটে জয়ী চিটাগং ভাইকিংস।
ঢাকা ডায়নামাইটস ইনিংস: ১৩৯/৯ (২০ ওভার)
(রনি ০, নারিন ১৮, কুন ১৮, সাকিব ৩৪, রাসুলি ০, নুরুল ২৭, রাসেল ১, শুভাগত ২৮, মোহাম্মদ নাঈম ৬, মোহর ০*; ফ্রাইলিঙ্ক ২/১৯, নাঈম হাসান ০/২৭, খালেদ আহমেদ ১/২৭, রাহি ২/২৬, মোসাদ্দেক ০/১১, দেলপোর্ট ৩/২৫)।
চিটাগং ভাইকিংস: ১৪৫/৭ (১৯.৫ ওভার)
(শাহজাদ ০, দেলপোর্ট ৩০, ইয়াসির ১৫, মুশফিকুর ২২, শানাকা ২, মোসাদ্দেক ৩৩, নাঈম হাসান ৪, ফ্রাইলিঙ্ক ২৫*, সানজামুল ২*; রাসেল ১/২৫, শুভাগত ০/১৬, সাকিব ৪/১৬, নারিন ০/২৬, রুবেল ১/২৪, মোহর ০/৩৭)।
ম্যাচ সেরা: রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক (চিটাগং ভাইকিংস)।