মাশরাফি ঝলকে টাইগারদের জয়

224

স্পোর্টস ডেস্ক :
সময়ের সঙ্গে রবিবার মিরপুর শের-ই-বাংলার গ্যালারিও ভরে গেল। মাশরাফির ২০০তম মাইলফলকের ম্যাচে স্বস্তির এক জয় উপভোগ করলেন ২৫ হাকজার দর্শক। মাশরাফি-মোস্তাফিজের দারুণ বোলিংয়ের পর মুশফিকের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে প্রথম ওয়ানডে বাংলাদেশ জিতল পাঁচ উইকেটে। তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে থাকলো বাংলাদেশ।
জুনে বিশ্বকাপের পর অবসর নেবেন মাশরাফি। দেশের মাটিতে এটাই তার শেষ সিরিজ। আর রবিবারের ম্যাচটা ছিল তার ২০০তম ওয়ানডে। মাশরাফিকে জয় উপহার দিতে চেয়েছিলেন সতীর্থরা। মাশরাফি নিজে বল হাতে যেমন আলো ছড়ালেন। পুরো দলও খেলল একাট্রা হয়ে। মাশরাফির জন্য।
বাংলাদেশের কিপটে বোলিংয়ের মুখে প্রথমে ব্যাট করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ উইকেটে তুলে মাত্র ১৯৫ রান। তিনটা করে উইকেট নেন মাশরাফি ও মুস্তাফিজ। জবাবে লিটন, মুশফিক ও সাকিবের লড়াকু ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩৫.১ ওভারেই ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ে পৌছে যায় বাংলাদেশ। মুশফিক ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
তামিম ফিরেছেন। লম্বা ব্যাটিং, নিজেদের মাঠ। ১৯৬ রানের লক্ষ্যকে অনেকেই অনেক ছোট মনে করেছিলেন। কিন্তু উইকেট যে সহজ নয়, সেটা তো আগের ইনিংসেই বোঝা গিয়েছিল। সেটা আরেকবার বুঝিয়ে দেন তামিম-ইমরুল।
শুরুতে দুই উইকেট পড়ে যাবার পর এই রানই অনেক বড় মনে হয়েছিল। তামিমের বিদায় মানে দলের আত্মবিশ্বাস অর্ধেক নেমে যাওয়া। সেই তামিম ফিরেছেন ১২ রান করে। উইকেটের চরিত্র বুঝে ওঠার আগেই ৪ রানে ফেরেন ইমরুল।
৪২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চিন্তায় তখন স্বাগতিকরা। ৫ রানের সময় জীবন পাওয়া লিটন দাসের সঙ্গে মুশফিক। তাদের দায়িত্বটা অনেক। মুশফিক তো অনেকবার দলকে কঠিন বিপদ থেকে পার করেছেন। লিটনের ব্যাটও ইদানিং কথা বলছে।
লিটন লড়াই করেছেন সাধ্যমতো। ৪১ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলার পর বোল্ড হয়েছেন। তবে তার আগে মুশফিকের সঙ্গে ৪৭ রানের পার্টনারশিপটা দলের জন্য বড্ড গুরুত্বপূর্ণ ছিল। লিটন ম্যাচটাকে সহজ করে দিয়ে গেছেন।
৩ উইকেটে ৮৯। অনেক ব্যাটসম্যান আছেন, বাংলাদেশের চিন্তা করার তেমন ছিল না। মুশফিক উইকেটে সেট হয়ে গেছেন। সাকিবের সঙ্গে তার একটা মাঝারি পার্টনারশিপ হলেই তো হয়ে যায়। হ্যাঁ, হলোও তাই। ৫৭ রানের মূল্যবান পার্টনারশিপ। সাকিব আরেকটু থাকলে পারলে আরো সহজ হয়ে যেত। তবে তার ৩০ রানের ছোট ইনিংটাও গুরুত্বপূর্ণ।
এরপর ১৯ রান করে সৌম্য যখন আউট হন তখন জয় থেকে মাত্র ২১ রান দূরে স্বাগতিকরা। যেটা অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে সারেন মুশফিক। ৭০ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। এটা তার ৩১তম ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরি। ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন রিয়াদ।
দুপুরে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উইকেটে ঘাস ছিল, একইসঙ্গে উইকেট বেশ স্লোও বটে। উইকেট থেকে সুবিধা নিয়ে দারুণ বল করেন বাংলাদেশের বোলাররা। শুরুতে টানা ৭ ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান দেন মাশরাফি।
১২৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর মনে হয়েছিল ১৭৫-১৮০ রানের মধ্যে গুটিয়ে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু শেষ দিকে রুবেলের আলগা বলে তরতর করে রান তুলে স্কোর ১৯৫ (৯ উইকেটে) এ নিয়ে যায় সফরকারীরা। শেষ ২ ওভারে ২৯ রান দেন রুবেল। অথচ আগের ৮ ওভারে ৩ এর কিছু উপরে রান দিয়েছিলেন ওভার প্রতি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শেষ দিকে টেনে তুলেন রোস্টন চেইজ ও কিমো পল। সপ্তম উইকেটে আসে ইনিংসের একমাত্র অর্ধশত জুটি। চেক করেছেন ৩২, আর পল ৩৬।
তার আগে অবশ্য বাংলাদেশের আঁটসাঁট বোলিংয়ের বিরুদ্ধে সাধ্যমত লড়াই করেন শাই হোপ। সর্বোচ্চ ৪৩ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এছাড়া ২৫ রান করেন স্যামুয়েলস।
নিজের ২০০তম ওয়ানডের মাইলফলকের ম্যাচে ৩০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মাশরাফি। ৩৫ রানে ৩ উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাকিব ও মিরাজ আঁটসাঁট বোলিং করলেও একটি করে উইকট নেন তারা। ৬১ রান খরচায় ১ উইকেট নেন রুবেল।