ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকের দোলারবাজার ইউনিয়নের বারগোপি পূর্ব ও পশ্চিমপাড়া গ্রামবাসির মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক নারি-পুরুষ আহত হয়েছে। শনিবার সকালে বারগোপি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৫জনসহ গুরুতর আহত ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, বারগোপি গ্রামের জমির উদ্দিন মেম্বার ও লুৎফুর রহমানের পক্ষদ্বয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি গ্রামের মাঠে শিশুদের ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে লুৎফুর রহমানসহ অন্যান্যরা। শুক্রবার বিকেলে মাঠে টুর্নামেন্ট চলাকালে জমির উদ্দিন মেম্বারের নেতৃত্বে খেলায় বাধা দেয়া হয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ আরো চরম আকার ধারণ করে। এসব বিষয় নিষ্পত্তি করতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে শনিবার সকালে গ্রামে এক সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকের এক পর্যায়ে জমির মেম্বারসহ তার পক্ষের লোকজন আপোষ সিদ্ধান্ত অমান্য করে বৈঠক প্রত্যাখ্যান করে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষকে মারামারি করার জন্য উস্কানি দেয়। এ উস্কানিতে লুৎফুর রহমান পক্ষের লোকজনও মারামারির জন্য প্রস্তুত হয়। কিছুক্ষণ পর দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্র, ইট পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি পুলিশের উপস্থিতিতে জমির পক্ষের লিটন মিয়া তার অবৈধ বন্দুক ব্যবহার করে একের পর এক গুলি প্রতিপক্ষের দিকে ছুঁড়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা মধ্যস্থতা করতে গিয়েও অনেকেই আহত হন। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়।
গুলিবিদ্ধসহ গুরুতর আহত মিজানুর রহমান (২৮), রুমেল মিয়া (২৫), সাজ্জাদুর রহমান (২৩), ছমির মিয়া (২০), জালাল উদ্দিন (২৮), জুবের মিয়া (২২), রাকিব হোসেন (২৬), শৈকত মিয়া (২২), নুরুল আমীন (২৭), সোহাগ আহমদ (২৫), সাকির (৩৭), হেলাল (৩৮), রুসনা বেগম (৩৫), জাকির (২২), আহমদ আলী (৩৬), লায়েক আহমদ (৩০), শফিকুর রহমান (৪৫), রিপন মিয়া (২৫), সয়ফুল আলম (৩০), জুনেদ (২৭), সুয়েব মিয়া (২২), নুর আলম (৩০)সহ ২৫জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যান্য আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। লুৎফুর রহমানসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোকজনরা জানান, পুলিশের উপস্থিতিতেই প্রকাশ্যে লিটন মিয়া তার অবৈধ বন্দুক দিয়ে একের পর এক গুলি ছুঁড়েছে। জাহিদপুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানিয়দের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এদিকে সংঘর্ষের পর লিটন কর্র্তৃক অবৈধ অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে গুলি ছুঁড়ার অভিযোগে এবং তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্থানীয়রা দুপুরে দোলারবাজারের সবজি গলিতে আফরোজ মিয়ার সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে বাজারের বিভিন্ন সড়ক বিক্ষোভ মিছিল প্রদক্ষিণ হয়। পুলিশ তাৎক্ষণিক অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান করে সফল হয়নি তবে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ স্থানিদের আশ্বস্ত করেছে। থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে।