গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
গোলাপগঞ্জে পৌরসভার উপ-নির্বাচনে আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন। আওয়ামীলীগে প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও বিএনপিতে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। ৪ প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন পত্র গ্রহণ করেছেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক ও সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলুকে দলীয় প্রতীক নৌকা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আওয়ামীলীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন বোর্ড তাকে প্রার্থীতা চূড়ান্ত করে। এর আগে উপজেলা আওয়ামীলীগ কেন্দ্রে তিনজনের নাম পাঠিয়েছিল। এদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মহিউস্সুন্নাহ চৌধুরী নার্জিস এর নাম মনোনীত করে কেন্দ্রে পাঠায় বিএনপি। কেন্দ্রে নাম পাঠানোর পর তিনি ধানের শীষ নিতে অনিহা প্রকাশ করছেন। ফলে বিএনপি পড়েছে এখন বেকায়দায়। কে নেবে ধানের শীষ? এনিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা। জানতে চাইলে শুক্রবার মহিউস্ সুন্নাহ চৌধুরী নার্জিস বলেন, আমি এলাকাবাসীর সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এলাকাবাসী চায় আমি স্বতন্ত্র¿ ভাবে নির্বাচন করি। তাই এলাকাবাসীর প্রতি সম্মান রেখে আমি ধানের শীষ না নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুক্রবার পৌর এলাকার ১.২ ও ৩নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেছেন স্বতন্ত্র¿ প্রার্থী হিসেবে। আরেক প্রার্থী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহিন রয়েছেন নির্বাচনী মাঠে। তিনি প্রথম থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন দলের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কে নেবে ধানের শীষ? আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তের পর উৎফুল্ল নৌকার মাঝি জাকারিয়া আহমদ পাপলু। তিনি বলেন, আমি নৌকা পেয়েছি। জনগনও নৌকাকে বিজয় করবে ইনশাহ আল্লাহ। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে এখন সতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করবেন যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেল। তিনি জানান, আমি নাগরিক কমিটির ব্যানারে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো। বর্তমানে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির ঘরানার একাধিক প্রার্থী স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনী মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
গোলাপগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি মশিকুর রহমান মহি জানান, এখন পর্যন্ত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার উপ নির্বাচনে কোন প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি, তবে এ বিষয় নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে এক বৈঠক চলে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল।
গতকাল বিকাল পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন অফিসার স্ইাদুর রহমান প্রতিবেদককে জানান, এ পর্যন্ত ৪জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র গ্রহণ করেছেন। তারা হলেন- গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগর প্রচার সম্পাদক জাকারীয়া আহমদ পাপলু, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মহিউসুন্নাহ্ চৌধুরী নার্জিস, যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেল, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহিন।
এদিকে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ। কাকে আগামী পৌর পিতা হিসাবে নির্বাচন করা যায়। কাকে দিয়ে প্রয়াত মেয়র মরহুম সিরাজুল জব্বার চৌধুরীর অসমাপ্ত কাজ পূরণ করা যায়। মাঠ-ঘাট, পাড়া-গলি, বাজার-রেস্তোরা সহ প্রতিটি স্থানে চলছে নির্বাচনী আলোচনা। পাশাপাশি চলছে ভোটারদের মাঝে নির্বাচনী আমেজ। প্রার্থীরা কেউ বসে নেই, সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। কোথাও কেউ মারা গেলেন কিংবা বিবাহ অনুষ্ঠান সহ প্রতিটি জায়গায় মেয়র প্রার্থীদের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীদের সমর্থক-শুভা কাঙ্খীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বেড়েই চলছে। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে মেয়র প্রার্থীর মতো কর্মী সমর্থকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নিজেদের পরিচিতজন সহ সবার কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। সব মিলে পৌরসভাজুড়ে চলছে এক অন্যরকম নির্বাচনী আমেজ।
উল্লেখ্য সাবেক মেয়র পৌর মেয়র সিরাজুল জব্বার চৌধুরী ৩১ মে মারা যাওয়ার পর ১ মাস ১১দিন পর ১১ জুলাই মেয়র পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় এ পদটি শূন্য ঘোষণা করার পর সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) এ উপ-নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা করা হয়। আগামী ৩ অক্টোবর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।