সিলেট প্রেসক্লাবে ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন ॥ রাজু হত্যাকান্ডে জড়িতদের দল থেকে বহিষ্কারের দাবি

80

স্টাফ রিপোর্টার :
আব্দুর রকিব চৌধুরী ও হাজী দিলোয়ার হোসেন দিনারের নেতৃত্বে কতিপয় সন্ত্রাসী সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ প্রচার সম্পাদক ফয়জুল হক রাজুকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের কমিটি থেকে পদত্যাগকারী ও পদবঞ্চিত নেতারা। রবিবার সিলেট প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, সিলেট এর ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করা হয়। রকিব-দিনারসহ রাজু হত্যাকান্ডে জড়িতদের দল থেকে বহিস্কার করতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের নেতৃবৃন্দের প্রতি তারা দাবি জানিয়েছেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন রুবেল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ১১ আগষ্ট নগরীর কুমারপাড়া এলাকায় ছাত্রদল নামধারী আব্দুল রকিব চৌধুরী ও হাজী দিলোয়ার হোসেন দিনার এর নেতৃত্বাধীন কতিপয় সন্ত্রাসদের হাতে খুন হন মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক ফয়জুল হক রাজু। এ সময় সন্ত্রাসী হামলায় আহত হন জাকির হোসেন উজ্জল ও সালাউদ্দিন লিটন। জাকির হোসেন উজ্জল আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খুনের এক সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত খুনীদের গ্রেফতার করা হয়নি। উল্টো খুনের প্রতিবাদকারী তিন জন সহকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছাত্রদলের বর্তমান কমিটিকে রক্ষা করতেই রাজুকে হত্যা করা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে প্রতিহিংসা হিসেবে বিবেচনা করেই পরিকল্পিতভাবে এই ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ড ঘটানো হয়ছে। রাজু হত্যার সাথে জড়িত খুনীদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নমনীয় আচরণ করলে ছাত্রদলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। সিলেট ছাত্রদরের গৌরবময় ইতিহাসকে অক্ষুন্ন রাখতে এরকম সন্ত্রাসীদেরকে সংগঠন থেকে বের করে দেওয়া একান্ত জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৩ জুন সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। নবগঠিত কমিটিকে ভারসাম্যহীন আখ্যায়িত করে কমিটি বাতিলের দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছিলাম। আমরা কমিটি বাতিলের দাবিতে মিছিল-মিটিং, স্মারক লিপি, সংবাদ সম্মেলন করেছি। কমিটি বিরোধী আন্দোলনে থাকাবস্থায় সিলেট বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, সিলেট বিএনপির সাংগঠনিক দায়িত্ব প্রাপ্ত, বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির খছরু মাহমুদ চৌধুরী ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের নেতৃবৃন্দ পৃথকভাবে আমাদের সাথে আলোচনা করে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, সিলেট সিটি নির্বাচনের পরপর কমিটির বিষয়ে আমাদের সাথে আলোচনা করে সুষ্ঠু সমাধান করা হবে। নেতৃবৃন্দের কথায় আশ্বস্ত হয়ে কমিটি বিরোধী আন্দোলন স্থগিত করে সিসিক নির্বাাচনে ধানের শীষের পক্ষে সক্রিয়ভাবে দিন-রাত পরিশ্রম করে বিজয় নিশ্চিত করেছি আমরা। যা সিলেট বিএনপির সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ অবগত রয়েছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিজয় মিছিলের সাথে সাথে আমাদের কাঁধে দেওয়া হল আমাদের সহকর্মী রাজুর লাশ। অথচ এই রাজু স্থগিত হওয়া দুই কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি রুখতে সকাল ৭টা থেকে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় দায়িত্ব পালন করেছিল।
এজাহার নামীয় আসামিদের সংগঠনের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের নেতৃবৃন্দের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়। রাজু হত্যাকান্ডে জড়িত রকিব, দিনারদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা ছাত্রদলে সিনিয়র সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম, (পদত্যাগী), জেলা সহ সভাপতি মাশরুর রাসেল (পদত্যাগী), মহানগর ছাত্রদলের সহ সভাপতি সুহেল রানা (পদত্যাগী), জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সুহেল ইবনে রাজা (পদত্যাগী), জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাজু (পদত্যাগী) , মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক শাকিলুর রহমান শাকিল (পদত্যাগী), মহানগর ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, পদাবঞ্চিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন রুবেল, সাবেক জেলা সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরুল হোসেন হিমেল, সাহিত্য প্রকাশনা সম্পাদক কামরান আহমদ, আব্দুল আহাদ সুমন, রাহাত আহমদ টিপু, সেলিম মিয়া, এনামুল হক জুম্মন, রুবেল আহমদ রানা, মিছবাউল আম্বিয়া, এমসি কলেজ ছাত্রদলে সদস্য সচিব দেলওয়ার হোসেন, ল-কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক আবু ইয়ামিন চৌধুরী, মইনুল ইসলাম, জেলা সদস্য মিজানুর রহমান, এ ইউ রানা শাহ, শাহাজান আহমদ, রাসেল আহমদ, আজমাল হোসেন অপু, মিজান আহমদ চৌধুরী, রাহেল আহমদ চৌধুরী, ইমাম মো. জহির প্রমুখ।