স্টাফ রিপোর্টার :
নগরী ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে পবিত্র ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে পথে পথে কোরবানীর পশুর অবৈধ হাট বসিয়েছে একটি মহল। কোরবানীর পশু বেচাকেনার জন্য ১২টি বৈধ হাট ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। এর বাইরে নগরীর কোথাও অস্থায়ীভাবে অবৈধ পশুর হাট বসালে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবে পুলিশ। এখন পর্যন্ত পুলিশ অবৈধ হাট ভেঙ্গে দিতে সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি কোথাও পশুবাহী গাড়ী জোরপূর্বক কোন গোষ্ঠী বা মহল আটক করছে এমন সংবাদ পেলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
অবৈধ হাটগুলো হচ্ছে- জেলা পরিষদের ব্যানারে কয়েদীর মাঠ, শাহী ঈদগাহ খেলার মাট সংলগ্ন দলদলি রাবার বাগানসহ রাস্তা, টিলাগড় পয়েন্ট, নিজাম মেম্বারের নেতৃত্বে এয়ারপোর্ট বাইপাস রোড, নগরীর শাহজালাল উপশহর, তেররতন, রিকারিবাজার, আম্বরখানা, আখালিয়া ও দক্ষিণ সুরমা ফল মাকের্টের বিপরীতে সুরমা নদীর পারে পশুর হাট বসিয়ে গরু-ছাগল কেনাবেচা হচ্ছে। যার ফলে বৈধ হাটের মালিকরা যেমন বিপাকে পড়েছেন অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে হাজার হাজার টাকার রাজস্ব।
এসব অবৈধ পশুর হাট ছাড়াও নগরীতে অসংখ্য পশুর হাট বসানোর তোড়জোড় চলছে। এসব হাট বসানোর নেপথ্যে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দল ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠন এবং বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। রাজনৈতিক ময়দানে এই দুই দলের নেতাকর্মীর মধ্যে দূরত্ব যোজন যোজন হলেও অল্প সময়ে বেশি মুনাফার আশায় এক হয়ে পশুর হাট বসান তারা। এরইমধ্যে বেশ কিছু জায়গায় ও রাস্তার পাশে খুঁটিও বসানো হয়েছে। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় রাস্তার ওপর পশুর হাট না বসাতে বলা হয়েছে। এ কারণে নগরীতে কোনো অবৈধ পশুর হাট ইজারা দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান সিলেট সিসি কপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান। রাস্তার পাশে হাট বসালে পদক্ষেপ নিতে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন বলেও জানায় মন্ত্রণালয়। এদিকে, মেট্রোপলিটন এলাকায় নগরবাসীকে বৈধ পশুর হাট থেকে গরু কেনার অনুরোধ জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে মহানগর পুলিশ।
এছাড়া অবৈধ পশুর হাট বসাতে পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে এমনটি হচ্ছে- নগরীর পাঠানটুলা, মদীনা মার্কেট, বাগবাড়ি, কানিশাইল, কুমারগাঁও, চৌখিদেখি, লাক্কাতুরা, এমসি কলেজ মাঠ, নয়াবাজার, মেজরটিলা, ইসলামপুর, গাজি বুরহান উদ্দিন সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে পশুর হাট বসানোর প্রস্তুতি চলছে।
বৈধ পশুর হাটগুলো হচ্ছে, নগরীর কোতোয়ালী থানার কাজিরবাজার পশুর হাট, জালালাবাদ থানার শিবের বাজার পশুর হাট, কুড়িরগাঁও (ইসলামগঞ্জ বাজার) পশুর হাট, বিমানবন্দর থানার সাহেব বাজার সুন্নিয়া হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার মাটে পশুর হাট, দক্ষিণ সুরমা থানার লালাবাজার পশুর হাট, কামালবাজার পশুর হাট, মোগলাবাজার থানার জালালপুর পশুর হাট, হাজীগঞ্জ বাজার ও রাখালগঞ্জ বাজার পশুর হাট এবং শাহপরান থানা এলাকায় আরও তিনটি পশুর হাট বসবে।
অভিযোগ রয়েছে- গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ সুরমা তেলিবাজার পয়েন্ট থেকে ৫টি মোটরসাইকে যোগে বেশ কিছু সন্ত্রাসী জোরপূর্বক গরুবাহী গাড়ী নিয়ে কাজিরবাজার হাটে আসার পথে বেপারীদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে শাহী ঈদগাহ খেলার মাট সংলগ্ন দলদলি রাবার বাগানের রাস্তার পশুর হাটে নিয়ে যায় তারা। এছাড়া শহরতলীর তেমুখী বাইপাস থেকে গরুবাহী ট্রাক আটকিয়ে সন্ত্রাসীরা তাদের অবৈধ পশুর হাটে গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে বাইরের জেলা থেকে সিলেটে গরু নিয়ে আসা বেপারীরা বর্তমানে আতংকে রয়েছেন।
কিন্তু সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানিয়েছেন, সিলেটে ১২টি হাট প্রশাসন ইজারা দিয়েছে। তাই এগুলো বৈধ হাট। এর বাইরে নগরীর কোথাও কোনো ধরণের পশু কেনা বেচার হাট করা হলে সেগুলো অবৈধ। আর পুলিশ অবৈধ হাটের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করবে।