কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ধলই চা বাগানে ব্যবস্থাপকের দ্বারা চা বাগানের গাছ অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগে চা শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। প্রতিবাদে চা শ্রমিকরা বুধবার (১ আগষ্ট) সকাল থেকে টানা ৪ ঘন্টা ধলই চ াবাগানে কর্ম বিরতি পালন করে। শীঘ্রই ধলই চা বাগান ব্যবস্থাপনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়ে সামাজিক বৈঠকের আশ্বাস দেওয়া হলে আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা ৪ ঘন্টা পর কাজে ফিরে যায়।
ধলই চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি গৌরাঙ্গ সাধু ও ইউপি সদস্য শিব নারায়ন শীল জানান, কিছু দিন পূবে ঝড়ে এ চা বাগানের প্রচুর পরিমাণে আকাশমনি, বেলজিয়ান ও শিরিষ গাছ ভেঙ্গে পড়েছিল। এ চা বাগানের প্রধান ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম সুযোগ বুঝে ঝড়ে পড়া এক ট্রাক গাছ অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছে। এ দিকে ধলাই চা বাগানের অনেক শ্রমিক ঘরের অবস্থা ভাঙ্গাচুড়া। দীর্ঘদিন থেকে চা শ্রমিকরা ব্যবস্থাপকের কাছে দাবি করেছিল ভাঙ্গাচুড়া ঘর মেরামত করে দিতে। তাতে ব্যবস্থাপক সাড়া দেননি।
এ দিকে বুধবার (১ আগষ্ট) আবার এক ট্রাক কাটা গাছ ব্যবস্থাপক অবৈধভাবে বিক্রির চেষ্টা করলে এ চা বাগানের সাধারণ চা শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। বিক্ষুব্ধ চা শ্রমিকরা বুধবার সকালে কাজে যোগ না দিয়ে চা বাগান কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে প্রধান ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে সকাল ৮টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করে। ঘটনার খবর পেয়ে মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালির (অঞ্চলের) সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনা ধলই চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সহায়তায় আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের সাথে সমঝোতা বৈঠক করেন। বৈঠকে এক সপ্তাহের মধ্যে ধলই চা বাগান কোম্পানীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি সালিশ বৈঠকের আশ্বাস দিলে বুধবার বেলা ১২টায় চা শ্রমিকরা কাজে ফিরে যায়।
মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালির সাধারণ সম্পাক নির্মল দাশ পাইনকা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সালিশ বিচারে বিষয়টির নিষ্পত্তি করার আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে চা শ্রমিকরা কাজে ফিরে গেছে।
তবে ধলই চা বাগান ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম অবৈধভাবে কাটা গাছ বিক্রি হয়নি দাবি করে বলেন, সাধারণ চা শ্রমিকরা ভুল বুঝে কর্মকিবরতি পালন করেছে। তিনি আরও বলেন,ইতিমধ্যেই এ চা বাগানের ২২২টি ভাঙ্গাচুড়া শ্রমিক ঘর কাঠ দিয়ে মেরামত করে দেওয়া। এখনও যে ঘর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে সেগুলি পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয় কাঠ দিয়ে মেরামত করে মেরামত করেও দেওয়া হবে।