স্টাফ রিপোর্টার :
জনপ্রিয় লেখক ও শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ফয়জুল হাসানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের (ভারপ্রাপ্ত) বিচারক হরিদাস কুমারের কাছে তিনি নিজে এ চার্জশিট দাখিল করেন। পরে আদালত ১ আগষ্ট এ চার্জশিট শুনানীর দিন ধায্য করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- জাফর ইকবালকে নাস্তিক মনে হওয়ায় ফয়জুল একাই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং একাই হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করেন। বাকি ৫ জনের বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
ফয়জুল ছাড়া চার্জশিটভুক্ত বাকি ৫ আসামিরা হচ্ছে- ফয়জুলের বন্ধু সোহাগ মিয়া, বাবা মাওলানা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসান।
৩৫৩ পৃষ্ঠার এ চার্জশিটে ৬০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, আটকের পর ফয়জুল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি অনুযায়ী, ফয়জুল ২০১৬ সালে তার বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে পাওয়া মেমোরি কার্ডে জসিম উদ্দিন রহমানি, তামিম ইল আদরানি ও অলিপুরি হুজুরের ওয়াজ শুনে জিহাদের ব্যাপারে প্রভাবিত হন। এছাড়া জসিম উদ্দিন রহমানির লেখা উন্মুক্ত তরবারি বই ও তিতুমির মিডিয়ার ভিডিও দেখে ফয়জুলের ধারণা হয় জাফর ইকবাল একজন নাস্তিক। এ ধারণা থেকে ফয়জুল একাই জাফর ইকবালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং একাই হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করেন। ওসি বলেন, ঘটনার বিভিন্ন স্থিরচিত্র, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে সিসি ক্যামেরায় ধরা ফুটেজ ও অন্যান্য সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৬ জন জড়িত বলে তাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। এ হামলার সঙ্গে পুলিশ কোনো জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা পায়নি বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ বিকেলে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান চলাকালে জাফর ইকবালের ওপর হামলা হয়। হামলার সময় মাদ্রাসাছাত্র ফয়জুল হাসান আটক হন।