কাজিরবাজার ডেস্ক :
উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষাতে এবার পাসের হার ও জিপিএ ফাইভ দুটোই কমেছে। ১০টি শিক্ষাবোর্ডে এবার পাস করেছে ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ২৯ হাজার ২৬২ জন শিক্ষার্থী।
গত বছর এই পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ, জিপিএ ফাইভ পেয়েছিলেন ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন। সে হিসাবে এবার উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হার কমেছে ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ বা জিপিএ ফাইভ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮ হাজার ৭০৭ জন।
সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই ফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সব বোর্ডের চেয়ারম্যানরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তারাও পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফল হস্তান্তর করেন। দুপুর ১টায় সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত ফল তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী।
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১টা ৩০ মিনিটে অনলাইনে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ফল ডাউনলোড করতে পারবে। এছাড়া এসএমএসের মাধ্যমে এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সবাই ফল পাবেন।
এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, একটি মাদ্রাসা এবং একটি কারিগরি বোর্ডের অধীনে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেন ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ ছাত্র ছাত্রী। যা গত বছর ছিল ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৩৭০ জন। এবছর পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ৩১৭ জন। এর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছেন ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮০১ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। গত বছর পাস করেছিলেন ৮ লাখ ১ হাজার ৭১১ জন।
এ বছর পাসের হার ৬৬.৬৪ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৬৮.৯১ শতাংশ। সে হিসেবে পাসের হার ২.২৭ শতাংশ কমেছে। এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ফাইফ ২৯ হাজার ২৬২ জন। গত বছর জিপিএ ফাইভ পান ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন। সে হিসেবে জিপিএ ফাইভ কমেছে আট হাজার ৭০৭ জন।
এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪০০টি, যা গতবার ছিল ৫৩২ টি। শূন্য পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত বছর ছিল ৭২টি, এবার ১৭টি কমে ৫৫টি হয়েছে। এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আট হাজার ৯৪৫। এটি গত বছর আট হাজার ৭৭১টি ছিল।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয় গত ২ এপ্রিল। তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলে ১৩ মে পর্যন্ত। আর ১৪ থেকে ২৩ মের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা। এইচএসসিতে আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে অংশ নেয় ১০ লাখ ৯২ হাজার ৬০৭ জন শিক্ষার্থী। আর মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ১ লাখ ১২৭ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম)-এ ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৫৪ জন ও ডিআইবিএসে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৬৯। এছাড়া বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে ছিল ২৯৯ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ১৫৯ জন ছাত্র ও ১৪০ জন ছাত্রী।
শিক্ষার্থীদের উল্লাস:
কলেজগুলোর পাশাপাশি ওয়েবসাইটেও ফল প্রকাশ করা হয়। এছাড়া মোবাইল ফোনে এসএমএস-এর মাধ্যমেও শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফল জানতে পারে। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ভাল ফল অর্জন করা কলেজগুলোতে নেমে আসে আনন্দের বন্যা। অভিভাবক, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। বাদ্য বাজিয়ে, হৈ-হুল্লোড় করে হাতে হাত রেখে নেচে-গেয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন জিপিএ ফাইভ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মিষ্টির দোকানগুলোতে বেচা-কেনার ধুম পড়ে যায়।