কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। রোজার ঈদের পর থেকে দু’সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজে ১০ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। এছাড়া আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। জাত ও মানভেদে ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ। বর্ষণে বেড়ে গেছে কাঁচামরিচসহ সবজির দাম। মৌসুমী ফলে ঠাসা ফলের বাজার। অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে এখন আম-কাঁঠাল কমদামে কিনতে পারছেন ভোক্তারা। নিত্যপণ্যের বাজারে বাড়ছে চাল ও ডিমের দাম। এছাড়া ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল ও আটার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বাজারে সবজির দাম বেড়ে গেছে। একলাফে ২৫-৩০ টাকা দাম বেড়ে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। এছাড়া ৪০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বাজারে। গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি। অথচ ঈদের আগেও ২০-২২ টাকায় বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ডায়মন্ড আলু। রোজার সময় পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক থাকলেও এখন বাজার চড়া। কোরবানি ঈদ সামনে রেখে পেঁয়াজের বাজার নিয়ে ফের কারসাজির আশঙ্কা করছেন সাধারণ ভোক্তারা।
তাদের মতে, রোজার সময় চাহিদা থাকলেও সেই সময় পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। আর এখন সরবরাহ ও বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার পরও পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এটা বাজারের জন্য ভাল লক্ষণ নয়। তারা বলছেন, প্রতিবছর কোরবানি সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর একটি প্রতিযোগীতা থাকে বাজারে। আর এক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীরা জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এবার যাতে এ ধরনের কোন সমস্যা তৈরি না হয়, সেজন্য আগে-ভাগে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার পরামর্শ রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
পেঁয়াজের পাশাপাশি বাজারে মোটা চালের দামও বাড়তির দিকে রয়েছে। প্রতিকেজি মোটা চালে ২-৩ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে গেছে। এবারের বাজেটে চাল আমদানিতে ২৮ শতাংশ রেয়াতি সুবিধা প্রত্যহার করায় ইতোমধ্যে আমদানিকৃত সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এখন ৪২-৪৫ টাকার নিচে কোন মোটা চাল পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া উন্নতমানের সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৬ টাকায়। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়।
দাম বাড়া প্রসঙ্গে চাল ব্যবসায়ী নূরু মিয়া বলেন, আমদানিকৃত সব ধরনের মোটা চালের দাম এখন বাড়তির দিকে রয়েছে। বিশেষ করে চায়না ইরি, স্বর্ণা, ও হাসকি জাতের চালের দাম বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে চাল আমদানিতে শুল্ক সুবিধা তুলে দেয়ায় আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আর এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। ফলে খুচরা বাজারে চাল বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।
হঠাৎ করে বেড়ে যাচ্ছে ফার্মের মুরগির দাম। এক সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে প্রতিহালী ডিম ২৫-২৬ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০ টাকার নিচে কোন ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। মাছ ও মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হলে বাজারে মাছের দাম কমছে না। মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, আড়ত পর্যায়ে মাছের দাম বেশি। আর এ কারণে ভোক্তা পর্যায়েও মাছ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি চিংড়ি ৬০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি রুই মাছ। এছাড়া মাঝারি সাইজের প্রতিজোরা ইলিশ দেড় থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০-৫০০ টাকায়। খাসির মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে কেজি। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভোজ্যতেলের বাজারে প্রতি পাঁচ লিটার সয়াবিনের বোতল ৪৮০-৫২০, পামওয়েল লুজ প্রতিলিটার ৭০-৭২ ও পামওয়েল সুপার ৭৩-৭৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি মসুর ডাল ৫৫-১১০, মুগডাল ৯০-১১০, ছোলা ৬০-৮০, রসুন ৫০-৯০, আদা ৭০-১২০ ওচিনি ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।