কাজিরবাজার ডেস্ক :
উৎক্ষেপণের ১০দিন পর নির্দিষ্ট কক্ষপথের প্রত্যাশিত স্থানে গিয়ে পৌঁছেছে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসস এই খবর নিশ্চিত করেছেন। স্যাটেলাইটটি নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে ঠিকঠাক মতো কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে গত ১১মে স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ১৪ মিনিটে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়।
নানা জটিলতায় বেশ কয়েকবার এর উৎক্ষেপণ পিছিয়ে যায়। তবে ১১ এপ্রিল সফলভাবে স্পেস-এক্স কোম্পানি আধুনিক ফ্যালকন-নাইন রকেটে করে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করে।
বাংলাদেশের গাজীপুর ভূ-উপগ্রহ থেকে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তবে গাজীপুর ভূ-উপগ্রহ থেকে এটির ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা শুরু করতে আরও প্রায় এক মাস লাগবে। এ ধরনের আরেকটি গ্রাউন্ড স্টেশন রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় স্থাপন করা হলেও সেটি গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশনের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।
সংযোগ স্থাপনের কাজ সরাসরি তদারকি করবে স্যাটেলাইটটি নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালস অ্যালেনিয়া স্পেসের বিজ্ঞানীরা।
গাজীপুর ও বেতবুনিয়ায় দুই দলে ভাগ হয়ে তারা কাজ করবেন। তাদের সহকারি হিসেবে পাশে থেকে সহায়তা করবেন বাংলাদেশের ১৮ তরুণ।
স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের ফলে আবহাওয়া নিয়ে আরও সঠিকভাবে পূর্বাভাস দেয়া ছাড়াও দুর্গম এলাকায় টেলিযোগাযোগ সেবা নিয়ে যাওয়া, টেলিমেডিসিন সেবা আরও বিস্তৃত করার পাশাপাশি টেলিভিশন সম্প্রসারে বিপ্লবের আশা করছে সরকার।
স্যাটেলাইটটিতে মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ২০টি ব্যবহার করবে আর বাকিগুলো বিদেশের কাছে ভাড়া দেয়ার পরিকল্পনা আছে।
বাংলাদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এখন অবধি বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়া করে চলছে। এই খাতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা দেশের বাইরে চলে যায়। নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হওয়ায় এই মুদ্রা বেঁচে যাবে।
১৫ বছর মেয়াদী দেশের প্রথম স্যাটেলাইট প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। এর প্রায় অর্ধেক সরকারি কোষাগার থেকে এবং বাকি টাকা বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি থেকে ঋণ হিসেবে নেয়া হয়েছে।
আগামী সাত বছরেই এই টাকা উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাকি আট বছরের টাকা পুরোটাই লাভ হবে বলে আশাবাদী সরকার।
২০৩৩ সালে এই স্যাটেলাইটের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আরও একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের বিষয়ে আগাম ঘোষণা আছে সরকারের।