কীর্তিমান সাংবাদিক, সিলেট প্রেসক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি, দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক ব্যুরো প্রধান আব্দুল মালিক চৌধুরীকে নিয়ে ‘অগ্রজের সঙ্গে একদিন’ শিরোনামে এক জমজমাট মুক্ত আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সিলেট প্রেসক্লাব আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নবীন-প্রবীণ সাংবাদিকদের মিথষ্ক্রিয়ায় ওঠে আসে গণমাধ্যমের নানা সঙ্কট-সম্ভাবনার কথা। পুরণো দিনের সাংবাদিকতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। আব্দুল মালিক চৌধুরী নিজের জীবনের নানা স্মৃতি টেনে নবীণ সাংবাদিকদের সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালণের আহবাণ জানান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবের আমীনুর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় এ ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের। ক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আব্দুল মালিক চৌধুরীর সহকর্মীরা তাঁর সাংবাদিক জীবনের নানা বর্ণময় দিক তুলে ধরেন। আব্দুল মালিক চৌধুরী নিজেও তাঁর সোনাঝরা দিনগুলো নিয়ে আলোকপাত করেন। নবীণ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন তিনি। লেখালেখি ও সাংবাদিকতায় ৫০ বছর পূর্তিলগ্নে সিলেট প্রেসক্লাব তাঁকে সম্মাননা প্রদান করায় প্রেসক্লাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এ গুণী সাংবাদিক।
সংবর্ধনার জবাবে আব্দুল মালিক চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকতার মূল শক্তি পেশাগত সততা। অনুমাননির্ভর তথ্য প্রচার সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেজন্য তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে এর সত্যতা বার বার যাচাই করে নিতে হবে। নিজের জীবনের বিভিন্ন গল্প উদ্বৃত করে তিনি বলেন, মানুষের ক্ষতি হয়, এমন সাংবাদিকতা থেকে নিজেকে সবসময় বিরত রেখেছি সচেতনভাবে। আজীবন সমাজের উপকারের জন্য সাংবাদিকতাকে কাজে লাগিয়েছি, কারো সম্মান বা, সম্পদহানীর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করিনি। এজন্য জীবন সায়াহ্নে এসে আমি আজ খুবই তৃপ্ত, প্রশান্ত। আমার চাওয়া-পাওয়া নিয়ে কোন আক্ষেপ নেই। সাংবাদিকতায় সততার পরীক্ষা দিতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে, কখনও কখনও চরম অর্থকষ্ঠকে সঙ্গি করে সততার পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু অনিয়ম, অসাধুতার কাছে নতি স্বীকার করিনি। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন আব্দুল মালিক চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা আব্দুল মালিক চৌধুরীর সাংবাদিকতা ও নেতৃত্বের গুণাবলী নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন। তাঁরা বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আব্দুল মালিক চৌধুরী একজন কোমল মনের মানুষ। মানুষের দূঃখ-কষ্টে তাঁর মন কেঁদে ওঠে। আজীবন কলম চালিয়েছেন মানবতার কল্যাণে, নির্যাতিতের পক্ষে। কিন্তু নেতৃত্বের বেলায় তিনি দৃঢ়চেতা, নীতিতে অবিচল। সিলেট প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন সময় নেতৃত্ব প্রদানে তিনি আপোসহীনতার পরিচয় দিয়েছেন বারবার। আব্দুল মালিক চৌধুরীর মত কীর্তিমান ব্যক্তিকে নিয়ে ‘অগ্রজের সঙ্গে একদিন’ অনুষ্ঠান আয়োজন করায় সিলেট প্রেসক্লাবকে অভিনন্দন জানান বক্তারা। এ আয়োজন অব্যাহত রাখারও পরামর্শ দেন তাঁরা।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দৈনিক সিলেটের ডাকের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল হামিদ মানিক, সিলেট প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এনামুল হক জুবের ও এম এ হান্নান, চ্যানেল এস’র বিশেষ প্রতিনিধি আব্দুল মালিক জাকা, দৈনিক জালালাবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আজিজুল হক মানিক, সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান আতা, মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর ও মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস সমর, দৈনিক জালালাবাদের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল কাদের তাপাদার, দৈনিক সিলেটের ডাকের সিনিয়র সাব এডিটর আব্দুস সবুর মাখন, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, দি ডেইলী ট্রাইব্যুনালের ব্যুরো প্রধান আব্দুর রাজ্জাক, দৈনিক কাজিরবাজারের সিনিয়র রিপোর্টার জেড এম শামসুল, প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ খালেদ আহমদ, দৈনিক ইত্তেফারে ব্যুরো প্রধান হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী, প্রেসক্লাবের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক নূর আহমদ, পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক খালেদ আহমদ, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. ফয়ছল আলম, শুয়াইবুল ইসলাম ও দিগেন সিংহ, আরটিভির ব্যুরো প্রধান কামকামুর রাজ্জাক রুনু, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় সভাপতি আব্দুল বাতিন ফয়সল, ইউএনবির সিলেট প্রতিনিধি ছিদ্দিকুর রহমান, ক্লাব সদস্য চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, মো. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, সেলিম আউয়াল, মো. আব্দুল মুকিত অপি, দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরো প্রধান কবির আহমদ, দৈনিক কাজিরবাজারের বার্তা সম্পাদক সোয়েব বাসিত, এটিএন বাংলার ব্যুরো প্রধান শাহ মুজিবুর রহমান জকন, দৈনিক জালালাবাদের চিফ রিপোর্টার আহবাব মোস্তফা খান, দৈনিক ইনকিলাবের ব্যুরো প্রধান ফয়সাল আমীন, ফটো সাংবাদিক মো. দুলাল হোসেন, দৈনিক সিলেটের ডাকের স্টাফ রিপোর্টার সুনীল সিংহ, আবু সাঈদ মো. নোমান ও ইউনুছ চৌধুরী, স্টাফ ফটোগ্রাফার জাবেদ আহমদ, দৈনিক সবুজ সিলেটের স্টাফ ফটোগ্রাফার শাহ মো. কয়েছ আহমদ, দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার মো. কামরুল ইসলাম, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার মো. আবদুল আহাদ, ক্যামেরাপার্সন নৌসাদ আহমেদ চৌধুরী, বাংলা টিভির ব্যুরো প্রধান আবু তালেব মুরাদ, দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার আবু বকর সিদ্দিক ও মুনশী ইকবাল, দৈনিক শুভ প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার শেখ আব্দুল মজিদ, ডেইলী ইন্ডাস্ট্রির স্টাফ রিপোর্টার গোলাম মর্তুজা বাচ্চু, এসএ টিভির ক্যামেরাপার্সন শ্যামানন্দ দাশ, দৈনিক সবুজ সিলেটের স্টাফ রিপোর্টার মো. মারুফ হাসান, দৈনিক শুভ প্রতিদিনের স্পোর্টস ইনচার্জ হাসান মো. শামীম, দৈনিক সবুজ সিলেটের স্টাফ ফটোগ্রাফার ইদ্রিছ আলী, দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার মো. শাফী চৌধুরী, দৈনিক সিলেট সংলাপের স্টাফ রিপোর্টার শরীফুল ইসলাম চৌধুরী, দৈনিক কাজিরবাজারের স্টাফ ফটোগ্রাফার মো. করিম মিয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন আব্দুল মালিক চৌধুরীর একমাত্র পুত্র তাসনিম হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রকাশিত আব্দুল মালিক চৌধুরী সম্মাননা স্মারক ‘বাতিঘর’ এর মোড়ক উন্মেচন করেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি