গোলাপগঞ্জে গৃহবধূ হত্যা ॥ শোকে পাথর নিহতের স্বজনরা, দুই চাচি আটক

80

গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
গোলাপগঞ্জে সুমি বেগম শাম্পু (৩৫) হত্যার ঘটনায় আপন দুই চাচিকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার দিন বুধবার রাত ১০টায় আয়েশা বেগম (৫৫) ও হাছনা বেগম (৩৫) নামে আজিব আলীর দুই স্ত্রীকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা নিহতদের আপন চাচি। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার নিহতের ভাই শাহিন আহমদ বাবু (৩৭) বাদী হয়ে আপন চাচা,চাচাতো ভাইসহ ১৭জনকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হলেন, আটক আপন দুই চাচি এবং চাচা আজিব আলীসহ ছেলে শিবলু (২৬), এমাদ (২৪), দুলাল (২২), বলন (২০), মৃত মজাইদ আলীর ছেলে লুকমান (৪৮), পারবেজ (২৭) ও আব্দুল মরিলের ছেলে রুমেল আহমদ। অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জন। ঘটনার পর রাতে নিহতের আপন দুই চাচিকে আটক করলেও ঘটনার পর থেকে খুনি পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে। তবে তাদের আটক করতে পুলিশ হন্য হয়ে খুঁজছে। রাত ৮টায় নিহতের জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। উল্লেখ্য গত বুধবার বিকালে নিহতের আপন চাচা ও চাচাতো ভাইসহ অন্যান্য সহযোগীরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে নিহতের পরিবারে হামলা চালায়। তাদের হামলায় গুরুতর আঘাপ্রাপ্ত নিহত সুমি বেগমকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে গতকাল বিকালে পুলিশ স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। নিহত সুমি বেগম শাম্পু গোলাপগঞ্জ পৌরসভার দাঁড়িপাতন গ্রামের তেতইউলি বাড়ীর রিপন মিয়ার স্ত্রী ও মৃত ছওয়াব আলীর মেয়ে। নিহতের স্বামী পেশায় একজন গার্মেন্সকর্মী। ঢাকা ধামন্ডির একটি গার্মেন্সে চাকরী করছেন। ঘটনার সময় তিনি কর্মস্থলেই ছিলেন। বুধবার রাতে বাড়ী আসেন। এদিকে বিকেলে নিহতের লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্স বাড়ীতে পৌছার পর স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে উঠে। শোকে পাতর নিহতদের স্বজনরা। বিকেলে নিহতের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। নিহতের মেয়ে রিপা বেগম (৯) ও ছেলে সুমন আহমদ (১৫) আমার মাকে এনে দাও বলে আহাজারি করছে। কেউই তাদের কান্না থামানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। ছোট মেয়ে রিপা ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও ছেলে মেকানিক। নিহতের মা বৃদ্ধা লুৎফা বেগমেরও আহাজারি থামছে না। তিনি আহাজারি করে বলছেন,বুধবার পুলিশ ও সাংবাদিকরা বলছেন আমার মেয়ে সুমি বেঁচে আছে। আজ আমার মেয়ে লাশ হয়ে বাড়ী ফিরছে। আমার মেয়ে কি অপরাধ করছিল। তারা আমার মেয়েকে মেরে ফেলল। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। নিহতের স্বামীরও কান্না থামছে না। ছেলে মেয়েকে শান্তনা দেয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহতের বড় ভাই শাহিন আহমদ বাবু। এসময় তিনি এজহার নামীয় আসামী ও অজ্ঞাত আসামীদের নাম ঠিকান নিশ্চিত করেন। এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি ফজলুল হক শিবলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান,এ ঘটনায় বুধবার রাতেই দুই’জনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের ভাই বাবু বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্য আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।