জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুরে অবশেষে সেই বিতর্কিত মেলার প্যান্ডেল ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। এতে বড় ধরণের সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পেয়েছেন এলাকাবাসী। জয় হয়েছে প্রতিবাদী জনতার। প্রসংশিত হয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের হাওরে দক্ষিণ সুনাগঞ্জ থানা এলাকায় বসন্ত মেলার নামে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার বসায় একটি মহল। তা প্রতিহত করতে দীর্ঘ প্রায় এক মাস ধরে আন্দোলন করছেন স্থানীয় প্রতিবাদী জনতা। অবশেষে এলাকাবাসীর আন্দোলনকে উপেক্ষা করে মেলার প্যান্ডেল তৈরী করা হয়। আগামি শনিবার রাত থেকে মেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল। এতে প্রতিবাদী জনতার ক্ষোভ আরো বৃদ্ধি পায়। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এলাকায় মাইকিং করে মেলাটি বন্ধের আল্টিমেটাম দিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে স্থানীয় সাদিপুর বাজার এলাকায় অবস্থান করেন হাজারো প্রতিবাদী জনতা।
অন্যদিকে-মেলা ভাঙ্গতে এলে প্রতিরোধ করার প্রস্তুতি নেয় আয়োজনকারীরা। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। দিনব্যাপী এলাকায় থমথমে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় দিন ব্যাপী ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। এ সময় মেলা বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদী জনতার উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কলকলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল হাসিমের সভাপতিত্বে ও দিলোয়ার হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক, উপজেলা আ’লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, সমাজসেবক আনিসুর রহমান তুতি, মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মাওলানা খন্দকার রুহুল আমিন, আবদুস সোবহান, মাওলানা জাকারিয়া, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা শাহিনুর রহমান, সামসুল ইসলাম, মাওলানা মতিউর রহমান, জেলা যুবলীগ নেতা আলাল হোসেন রানা, মাওলানা সাইফুর রহমান সাজাওয়ার, হাফিজ কবির আহমদ, আ’লীগ নেতা নুরুল হক, হুমায়ূন কবির ফরিদী, জামাল হোসেন প্রমুখ।
এ সময় সমাজকর্মী সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার, আবদুল কাহার, খসরু মিয়া, জগন্নাথপুর উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া, যুগ্ম-সম্পাদক হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া সহ জগন্নাথপুর, ছাতক ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার হাজারো প্রতিবাদী জনতা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা যাত্রা নামের মেলার প্যান্ডেল ভাঙার আল্টিমেটাম দিয়ে উত্তেজনা মূলক বক্তব্য রাখেন। এ সময় প্রতিবাদী জনতাকে শান্তনা দিয়ে মেলার প্যান্ডেল ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য রাখেন জগন্নাথপুর থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী।
অবশেষে বিকেল ৪ টার দিকে জগন্নাথপুর থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী, ওসি (তদন্ত) আশরাফুল ইসলাম ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইন থেকে আসা অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ এবং জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশ সেই মেলার প্যান্ডেল ভেঙে দেয়। প্যান্ডেলটি ভেঙে দেয়ায় প্রতিবাদী জনতার মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। এ সময় মেলার আয়োজনকারীরা পালিয়ে যায়।