গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের বল্লাপুঞ্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও বিদ্যালয়ের নিজস্ব জায়গা দখল করে কয়েক বছর ধরে পাথর ষ্টক করছেন কতিপয় ব্যবসায়ীরা। এতে করে অত্র বিদ্যালয়ে অধ্যায়ণরত ছাত্রছাত্রীদের একদিকে নিয়মিত পাঠদানে ব্যাহত হচ্ছে। অপরদিকে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে খেলাধূলার সুযোগ-সুবিধা থেকে।
জানা যায় বল্ল¬¬াপুঞ্জি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ২ একর ভূমি রয়েছে। এই বিদ্যালয়ের ভূমি নিয়ে স্থানীয় দিলু বখত (দিলু খাসিয়া) নামের এক ব্যক্তির সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বিদ্যালয়টির ভূমির মালিকানা দাবী করে ওই ব্যক্তি আদালতে মামলাও করেছেন। যদিও কাগজপত্র মূলে ওই ভূমির মালিকানা বল্লাপুঞ্জি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও ভূমি রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন (তৃতীয়) প্রকল্পের আওতায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এতে বাধাঁ দেন দিলু খাসিয়া। এছাড়াও নিজের যায়গাা দাবী করে দীর্ঘ দিন থেকে বিদ্যালয়ের মাঠে পাথরের ষ্টক ও ক্রাশার মেশিন বসিয়ে নিয়মিত ভাড়া দিয়ে আসছেন। এতে প্রশাসন ও রয়েছে নির্বিকার। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও পাথর ষ্টক করা অব্যাহত রেখেছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের চারপাশেই পাথরের ষ্টক। পাশাপাশি ক্রাশার মেশিনের শব্দ আর ধূলো-বালি পেরিয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। খেলাধূলা করছে সবাই নিজ নিজ শ্রেণি কক্ষে। প্রতিবেদক চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে শ্রেণি কক্ষের ভেতরে খেলার কারণ জানতে চাইলে সে উত্তর দেয়, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ নেই। নেই খেলাধূলা করার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। বিদ্যালয়ের মাঠে পাথর রাখার কারণে তারা নিয়মিত শ্রেণি কক্ষেই খেলাধূলা করছে। সেই সাথে ধূলোবালিতে নিয়মিত ক্লাস নিতে পারছেন না এমন অভিযোগ শিক্ষকদের। পাথর লোড-আনলোড ও ক্রাশার মেশিনের বিকট শব্দে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাঠদান আদান-প্রদানে বিঘিœত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান জানান আমি বিদ্যালয়ের সকল সমস্যা শিক্ষা অফিসে জানিয়েছি। ওনারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করে যাবো।
সিলেট জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ওবায়দুল্লাহ শাহীন বলেন আমি সিলেট জেলায় নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। বল্লাপুঞ্জি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভূমি জটিলতার ব্যাপারে অবগত আছি। বিষয়টি নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ^জিত কুমার পাল জানান কতিপয় অসাধু ব্যক্তিরা স্কুলের যায়গা দখল করার অপচেষ্টা করছে। সরকার স্কুলের যায়গা রক্ষার জন্য বিভিন্ন অনুদান দিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় সীমানা প্রাচীরের কাজ হাতে নিলে চক্রটি নিয়মিত বাধা প্রদান করে আসছে। সর্বোপরি স্কুলের জায়গা রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন সচেষ্ট আছে।