ক্রীড়াঙ্গন রিপোর্ট :
আরেকটি শিরোপা হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল ম্যাচে শনিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৯ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ। এই ম্যাচে একাই লড়াই করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৭৬ রান করে শেষ ব্যাটসম্যান হিসাবে আউট হন তিনি। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আজ অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ২২ বছর বয়সী শ্রীলঙ্কান পেসার শিহান মাদুশানকা হ্যাটট্রিক করেছেন।
এদিন শ্রীলঙ্কার দেয়া ২২২ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪১.১ ওভারে ১৪২ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ রান করেন মুশফিকুর রহিম। শ্রীলঙ্কার পক্ষে দুশমান্থ চামিরা ২টি, শিহান মাদুশানকা ৩টি ও আকিলা ধনঞ্জয়া ২টি করে উইকেট নেন।
সাকিব আল হাসানের ইনজুরিতে এমনিতেই আজ নয় উইকেট নিয়ে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। তার মধ্যে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়। দলকে টেনে তুলতে পারলেন না কেউ। বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১১ রানে প্রথম উইকেট হারায়। দুশমান্থ চামিরার বলে আকিলা ধনঞ্জয়ার হাতে ক্যাচ হন তামিম ইকবাল। তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে তিন রান। দলীয় ১৭ রানে রান আউট হন মোহাম্মদ মিঠুন। ২৭ বল খেলে ১০ রান করেন তিনি। ইনিংসের দশম ওভারে দুশমান্থ চামিরার বলে আসেলা গুনারতেœর হাতে ক্যাচ হন সাব্বির রহমান।
দলীয় ২২ রানে তিন উইকেট হারানোর পর মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল বাংলাদেশ। এই জুটিতে স্বপ্ন দেখছিল টাইগাররা। কিন্তু সেটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ৮০ রানে আকিলা ধনঞ্জয়ার বলে উপুল থারাঙ্গার হাতে ক্যাচ হন মুশফিকুর রহিম। ৪০ বল খেলে তিনি করেন ২২ রান। এরপর দলীয় ৯০ রানে বোলার আকিলা ধনঞ্জয়ার হাতে ধরা পড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৭তম ওভারে রান আউট হন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৪০তম ওভারের পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে যথাক্রমে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও রুবেল হোসেনকে সাজঘরে ফেরান শিহান মাদুশানকা। ৪২তম ওভারে আবার বোলিংয়ে আসেন তিনি। ওভারে প্রথম বলেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন। যার ফলে হ্যাটট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন তিনি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২২১ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন উপুল থারাঙ্গা। এছাড়া দিনেশ চান্দিমাল করেন ৪৫ রান। নিরোশান ডিকওয়েলা করেন ৪২ রান। বাংলাদেশের পক্ষে রুবেল হোসেন ১০ ওভার বল করে ৪৬ রান দিয়ে চারটি উইকেট নেন। ১০ ওভার বল করে ২৯ রান দিয়ে দুইটি উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া মাশরাফি বিন মুর্তজা ১টি, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১টি ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৭৯ রানে জয়ী শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কা ইনিংস: ২২১ (৫০ ওভার)
(দানুশকা গুনাথিলাকা ৬, উপুল থারাঙ্গা ৫৬, কুসল মেন্ডিস ২৮, নিরোশান ডিকওয়েলা ৪২, দিনেশ চান্দিমাল, থিসারা পেরেরা ২, আসেলা গুনারতেœ ৬, আকিলা ধনঞ্জয়া ১৭, শিহান মাদুশানকা ৭, সুরঙ্গা লাকমল ২, দুশমান্থ চামিরা ১*; মেহেদী হাসান মিরাজ ১/৫৩, মাশরাফি বিন মুর্তজা ১/১৫, মোস্তাফিজুর রহমান ২/২৯, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০/১৮, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১/১৫, সাকিব আল হাসান ০/২০, রুবেল হোসেন ৪/৪৬)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৪২ (৪১.১ ওভার)
(তামিম ইকবাল ৩, মোহাম্মদ মিঠুন ১০, সাব্বির রহমান ২, মুশফিকুর রহিম ২২, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৭৬, মেহেদী হাসান মিরাজ ৫, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৮, মাশরাফি বিন মুর্তজা ৫, রুবেল হোসেন ০, মোস্তাফিজুর রহমান ০*, সাকিব আল হাসান (অ্যাবসেন্ট হার্ট); সুরঙ্গা লাকমল ০/২৯, দুশমান্থ চামিরা ২/১৭, থিসারা পেরেরা ০/৩১, শিহান মাদুশানকা ৩/২৬, আকিলা ধনঞ্জয়া ২/৩০, দানুশকা গুনাথিলাকা ০/৪)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: উপুল থারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)।
প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ: থিসারা পেরেরা (শ্রীলঙ্কা)।