নগরীর মীরাবাজারস্থ রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম বিদ্যার্থী ভবনের প্রথম ছাত্র পুনর্মিলনী উৎসব গত ২২ ডিসেম্বর শুক্রবার দিনব্যাপী মিশন আশ্রম প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র পুনর্মিলনী উৎসবটি মিলন মেলায় পরিণত হয়। প্রাক্তন ছাত্র ও বর্তমান ছাত্রদের উপস্থিতিতে ছিল রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম উৎসব মুখর। দিনব্যাপী এ উৎসব পৃথক পৃথক ৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে প্রথম অধিবেশনে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী চন্দ্রনাথানন্দ। মিশনের পতাকা উত্তোলন করেন কলকতা রামকৃষ্ণ মঠ বাগবাজারের অধ্যক্ষ স্বামী নিত্যমুক্তানন্দ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিনয় ভূষণ তালুকদার। ৯টা ১৫ মিনিটে বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা বের করা হয়। শোভা যাত্রাটি রামকৃষ্ণ মিশন থেকে বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে শেষ হয়।
দ্বিতীয় অধিবেশনে ছিল সকাল সাড়ে ১০টায় স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন, উপহার সামগ্রী বিতরণ ও স্মৃতিচারণ। পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটর আহবায়ক ফণী ভূষণ সরকারের সভাপতিত্বে এবং শ্যামল চন্দ্র দেব, কানন কান্তি দাস ও কালীপদ আচার্য্যরে যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কলকতা রামকৃষ্ণ মঠ বাগবাজারের অধ্যক্ষ স্বামী নিত্যমুক্তানন্দ, আলোচনায় অংশ নেয় স্বামী পূর্ণব্রতানন্দ ও স্বামী হরিদাসানন্দ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রাক্তন ছাত্র শিমুল রায়, বিকেল ৩টায় তৃতীয় অধিবেশনে ছিল সম্মাননা প্রদান, এতে সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন ছাত্র এডভোকেট শশাংক শেখর পাল, প্রধান অতিথি ছিলেন কলকতা রামকৃষ্ণ মঠ বাগবাজারের অধ্যক্ষ স্বামী নিত্যমুক্তানন্দ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এসএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার বাসুদেব বণিক। আলোচনায় অংশ নেয় অগ্রণী ব্যাংক সিলেটের ব্যবস্থাপক রূপক ভট্টাচার্য্য, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সত্যব্রত রায়, ডা. রঞ্জন রায়, বাসুদেব পাল, কালীপদ আচার্য্য ও প্রাক্তন ছাত্র দীপন বিশ্বাস।
বিকেল ৫টায় ৪র্থ অধিবেশনে ছিল আলোচনা সভা, সভাপতিত্ব করেন রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী চন্দ্রনাথানন্দ। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিসিকে’র সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। সম্মানীতি অতিথির বক্তব্য রাখেন এসএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (্উত্তর) ফয়ছল মাহমুদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক পরিমল কান্তি দে। আলোচনায় অংশ নেয় অধ্যাপক বিজিত কুমার দে, এডভোকেট কল্যাণ চৌধুরী, শাবিপ্রবি’র সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, কানন কান্তি দাস প্রভাষক এমসি কলেজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুনর্মিলনী কমিটির সম্পাদক দেবাশীষ রায়, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ননী গোপাল রায়। স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন আশ্রমের প্রাক্তন ছাত্র মধুসুদন পাল, বিদ্যুৎ জ্যোতি চক্রবর্তী, যীষ্ণু চক্রবর্তী, চন্দন আচার্য্য, সুব্রত রায়, অঞ্জন সরকার, নিকেতন চক্রবর্তী, অজয় দেব, নিখিল রুদ্র পাল, রাজীব সেন, অমল চন্দ্র দাস, বিমান তালুকদার প্রমুখ।
সন্ধ্যা ৭টায় ৫ম অধিবেশনে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিল্পী চম্পা বণিক, রাত ৮টায় বাউল সংগীত পরিবেশন করবেন-শিল্পী বাউল শামীম আহমদ ও সূর্যলাল দাস। রাত ৯টায় উপস্থিত সকলের জন্য ছিল আপ্যায়ন। দিনব্যাপী উৎসব সফল করায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন ছাত্র পুনর্মিলনী উৎসব কমিটির আহ্বায়ক ফণী ভূষণ সরকার ও সদস্য সচিব দেবাশীষ রায় ও কোষাধ্যক্ষ চন্দন দত্ত।
অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির নগরী গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। মিশন আশ্রমে আরো ছাত্র বৃদ্ধি করা হলে আমার পক্ষ থেকে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আশ্রমে লেখাপড়া করে যারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তাদেরকে মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহবান জানান।
সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, রামকৃষ্ণ মিশন আর আগের মতো নয়। আশ্রমে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এখানে লেখাড়া করে যারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তারা মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুক রাখতে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সচেষ্ট হতে হবে। বিজ্ঞপ্তি