সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না গবাদি পশুর ॥ কানাইঘাট প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে

81

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে লোকবলের অভাবে প্রশাসনিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অভাবে গবাদি পশুর পরীক্ষা নিরীক্ষায় নানা ধরনের হয়রানীর শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ১১টি পদের মধ্যে ৭টি পদ শূন্য রয়েছে। ডাঃ রঞ্জিত কুমার আচার্য্য প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। কানাইঘাটের তুলনায় বেশির ভাগ সময় থাকেন বিয়ানীবাজার উপজেলায়। একমাত্র ভ্যাটেনারী সার্জন ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বর্তমানে অফিসে কর্মরত রয়েছেন। বিএফএ ৩টি পদের মধ্যে ২টি, ইউএল ও এফএ (এআই) পদ শূন্য। অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার পদটি দীর্ঘদিন থেকে শূন্য। ড্রেসার নাই। লোক স্বল্পতার কারনে অফিসের কার্যক্রম একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে আরিফ আফসার নয়ন ও আমিনুর রহমান কাজ করছেন অফিসে। অফিসের বাউন্ডারী না থাকায় গরু বাছুর প্রবেশ করে। সিএনজি স্ট্যান্ড বানিয়ে ফেলেন ড্রাইভাররা অফিসের মাঠে। উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে পরিদর্শক হিসাবে ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চষে বেড়ান, অফিসে সময় দিতে পারেন না। সেই সুবাদে বহিরাগত কিছু লোক পশু চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। মফস্বল এলাকায় পশু চিকিৎসার জন্য বহিরাগত ১০/১২জন লোক উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গরু, মহিষ ও বিভিন্ন পশুর চিকিৎসা প্রদান করেন। বিনিময়ে গরু মহিষের মালিকদের নিকট থেকে চিকিৎসা বাবৎ টাকা দাবী করেন। এলাকার লোকজন নিরুপায় হয়ে গ্রাম্য চিকিৎসকদের টাকা পরিশোধ করতে হয়। এতে করে গরু, মহিষ পালনকারীদের সংখ্যা দিন দিন কমছে। সরকারী সেবা পাচ্ছে না উপজেলাবাসী। সরকার কর্তৃক যে সব ঔষধ, ভ্যাকসিন, পাউডার আসে পশু সম্পদ অফিসে, তাহা পথু চিকিৎসকদের মাধ্যমে বিক্রির অভিযোগ আছে। লোকজনের অভিযোগ পশু সম্পদ অফিসে গেলে ঔষধের বদলে তাদের হাতে ব্যবস্থাপত্র ধরিয়ে দিয়ে বলা হয় বাহির থেকে ঔষধ কিনতে। দীর্ঘ ৭বছর পূর্বে ছোটদেশ গ্রামের মুহিবুর রহমান অবসরে চলেন যান। কিন্তু লোক স্বল্পতার কারনে তাহাকে প্রতিদিন অফিসে থাকতে দেখা যায়। তাকে সহযোগিতা করেন সুরইঘাট এলাকার দীলিপ বাবু। হাসপাতালে আগত লোকজন জানান সরকারী অফিস শুনিয়া আসিলেও টাকা ছাড়া কোন সেবা পাওয়া যায় না। বাড়ীতে লোক নিলে বড় অঙ্কের টাকা দাবী করায় গরু মহিষের মালিকরা অসহায় হয়ে পড়েন। গরীব লোকজন চিকিৎসকদের বাড়ীতে যাওয়ার টাকা পরিশোধ করলেও স্যারের নাম বলে আরো টাকা দাবী করা হয়। মামুন, আরিফ, জাকির, বহিরাগত হলেও তাদের ভিজিটিং কার্ডে ডাক্তার হিসাবে বিভিন্ন উপাধি লিখা আছে।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে ভ্যাটেনারী সার্জন ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমি কোন টাকার জন্য কাউকে চাপ দেই না। অফিসে ১জন কম্পাউন্টার ও ১জন ক্লার্ক পেলে সুবিদা হবে। অলিখিত চুক্তিতে লোকজন এনে কাজ বা চিকিৎসা করানো হয় লোক স্বল্পতার কারনে। বিনিময়ে কিছু টাকা সেবা প্রাপ্তিরা দিয়ে যায়। মফস্বলে যে সকল চিকিৎসকরা চষে বেড়ান সবার হুন্ডা আছে। যার বিনিময়ে তারা কিছু টাকা পেয়ে থাকে। সরকারী যেসব ঔষধ দেয়া হয় তা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়, টাকা নেয়া হয়।