বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর থেকে :
কোন হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে, কোন হাওরে ধান পাকতে শুরু করেছে আবার কোন-কোন হাওরে বিস্তীর্ণ ক্ষেতজুড়ে পাকা সোনালী ধানের শীষ উত্তরের বাতাসে দোল খাচ্ছে। তাহিরপুর উপজেলার উত্তর পূর্বে লাউড়েরগড় থেকে থেকে পশ্চিমে বীরেন্দ্রনগর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সীমান্তে ছোট-ছোট হাওরের ক্ষেত জুড়ে এখন সল্প মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী আমন ধানের ম-ম সুবাস বইছে। নতুন ধান উঠবে কৃষকের গোলায় সেই স্বপ্নে চাষীদের মুখে ফুটে উঠছে হাসির ঝিলিক।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত মাঠে পরিশ্রম করছেন কৃষক। ধান কাটা, বাঁধা ও বাড়ি নিয়ে মাড়াই করার কাজে কৃষক-কৃষাণী ছেলে মেয়ে ব্যস্ত সময পার করছেন। অনুকূল আবহাওয়া, পোকার আক্রমণ ও রোগ বালাই কম হওয়ায় অন্য বছেরের তুলনায় এবার ফলনও বেশী। তাই কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক।
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলা মূলত বোরো ফসল প্রধান এলাকা। উপজেলার সাত ইউনিয়নের মধ্যে ৪ ইউনিয়নের কিছু অংশে আমন ধান চাষাবাদ করা হয়। চলতি বছর উপজেলার বালিজুরী, বাদাঘাট, উত্তর বড়দল ও উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়নে ১২ হাজার একর জমিতে আমন ধান চাষাবাদ করা হয়েছে।
সরজমিন উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম বরগুফ হাওরে গিয়ে দেখা যায় বির্স্তীর্ন হাওর জুড়ে বাতাসে-বাতাসে দোল খাচ্ছে পাকা ধান। সে সময় কথা হয় হাওরের কৃষক নবী হোসেনের সাথে তিনি জানান আবহাওয়া ভাল থাকায় এবার তার ফলন ভাল হয়েছে, দু’এক দিনের মধ্যে তিনি ধান কাটতে শুরু করবেন।
সীমান্ত পথ ধরে আরও কিছু দূর এগুনোর পর কড়ইগড়া হাওরে গিয়ে দেখা হয় গ্রামের কৃষক আব্দুল মোতালেব এর সাথে তিনি জানান চলতি বছর তিনি স্বল্প মেয়াদী জাতের ধান চাষাবাদ করেননি অন্যান্য জাতের ধান চাষাবাদ করায় তার ধান পাকতে একটু দেরী হচ্ছে।
জানা যায় ব্রি-৩৩ ও বিণা-৭ এ দু’টি জাত স্বল্প মেয়াদী । অন্যান্য জাতের ধান যেখানে পাকতে সময় লাগে ১৪০ থেকে ১৪৫ দিন সেখানে ব্রি-৩৩ ও বিণা-৭, পাকতে সময় লাগে ১০০ থেকে ১১০ দিন।
বাদাঘাট ইউনিয়নের পুরান লাউড় মোকসেদপুর গ্রামের গ্রামের কৃষক রহিম উদ্দিন জানান, চলতি আমন মৌসুমে তিনি ৩ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আমন ধান রোপন করছেন ফলনও ভাল হয়েছে সেই সাথে অন্যান্য জাতের চাইতে আর ১০ দিন আগে ধান কেটেছেন।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, আগাম জাতের ধান গুলো কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। অন্যান্য জাতের ধানগুলো ১ সপ্তাহের মধ্যেই কাটা শুরু হবে। অল্প সময়ে কম খরচে বেশী লাভবান হওয়ায় সেই সাথে চলতি বছর ফলন ভাল হওয়ায় ধান চাষে কৃষক আরও আগ্রহী হয়ে উঠবে।