কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুর বাড়ীতে প্রতিপক্ষের হামলায় পিএসসি পরীক্ষার্থী বৃষ্টি মালাকার (১০), তার পিতা রসই মালাকার (৫৫), মাতা দিপ্তী রানী মালাকার (৪৫) আহত হয়েছেন। স্থানীয় আহতদের উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাতে মুন্সীবাজার ইউনিয়নের ঠাকুর বাজার এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ইসলাম মিয়ার দোকানের সামনে রসই মালাকারের ছেলে প্রফুল্ল মালাকারের অটোরিক্সাটি চালক ভুলবশত: রেখে যায়। এ নিয়ে প্রফুল্লের সাথে দোকানীর বাকবিতন্ডা দেখা দিলে বাজার কমিটির সভাপতি ফারুক মিয়া তাৎক্ষণিক বিষয়টি শেষ করে দেন। প্রফুল্ল মালাকার অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার সকাল ৭ টার দিকে ইসলাম মিয়ার নেতৃত্বে আজাদ মিয়া, মিজান মিয়া, মাসুক মিয়া, কালাম মিয়া, জামাল মিয়া, হায়দার মিয়াসহ একদল লোক লাঠি সোঠা নিয়ে আমাকে খোঁজতে থাকে। আমি প্রাণ ভয়ে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে পড়ি। প্রফুল্লকে না পেয়ে তার বাব রসই মালাকার, মা দিপ্তী রানী মালাকার ও একমাত্র ছোট বোন বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী ও কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের এবারের পিইসি পরিক্ষার্থী বৃষ্টি মালাকারের উপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে কমলগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক কৃষ্ণমোহন দেবনাথের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তৃতি চলছে।
এদিকে পিইসি পরীক্ষার্থী বৃষ্টি মালাকারের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরীক্ষা শুরুর ৪০ মিনিট পর বাদুদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী আহাদ মিয়া আহত শিক্ষার্থী বৃষ্টিকে কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিয়ে যায়। আহত অবস্থায় বৃষ্টি মালাকার মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
ঘটনাটির বিষয়ে জানতে চাইলে হামলাকারী ইসলাম মিয়া জানান, সোমবার রাতে প্রফুল্ল মালাকারের সাথে আমার বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হলে এবিষয়ে মঙ্গলবার সকালে তার পিতার কাছে নালিশ করতে তার বাড়ীর পাশে সবজি বাগানে গেলে তিনি উত্তেজিত হয়ে তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হলে আমার ছোট ভাই বাঁশ দিয়ে দুটি প্রহার করে, এখানে আর কিছু হয়নি। পরীক্ষার্থীর বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
পিএসসি পরীক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব সত্যেন্দ্র কুমার পাল ও হল সুপার আফিয়া বেগম নিন্দা জানিয়ে ইসলাম মিয়ার রিবরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বদরুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।