মাহবুব আহমদ খান, বিয়ানীবাজার থেকে :
পঞ্চাশ শয্যা বিশিষ্ট বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর তুলনায় শয্যা অপ্রতুল্য, মেঝে ও বারান্দায় শয্যা পেতে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন রোগীরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। এসব শিশুর অধিকাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও স্বজনরা।
সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের দাবি, হাসপাতালে আলাদা শিশু ও গাইনি ওয়ার্ড থাকলে তাদের ভোগান্তি কমে যেত। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীলরা জানান, নির্ধারীত শয্যায় রোগীর সংকুলান না হওয়ায় বাড়তি শয্যা পেতে রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পৃথক পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে সব ধরনের রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রসূতি, শিশু, বার্ধ্যক্যসহ সব ধরনের রোগীই এ দুই ওয়ার্ডে থেকে সেবা গ্রহণ করছেন। সম্প্রতি শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া হাসপাতালের নির্ধারিত শয্যার দ্বিগুণ রোগী সেবা গ্রহণ করছেন। যার কারণে সেবা নিতে আসা রোগীদের ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায়।
হাসপাতালের বারান্দায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে এক মা দুই ওয়ার্ডের মধ্যখানের বারান্দায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে বসে আছে লাউতা ইউনিয়নের গজারাইগ্রামের গৃহিনী জেলি বেগম। ভেতরের মেঝেতেও জায়গা না থাকায় তাকে বারান্দায় শয্যা দেয়া হয়েছে। জেলি বলেন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কন্যা তানজিলা ইসলাম (১৩ মাস) নিয়ে হাসপাতালে আসলে ডাক্তার ভর্তি দেন। ওয়ার্ডে এসে দেখি জায়গা নেই। তারপর এখানে একটি পুরাতন শয্যা পেতে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাইরে হওয়া রাতের বেলা কনকনে বাতাস প্রবেশ করায় মা ও শিশু উভয়ের কষ্ট হয়।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু ফাইজিয়া ইসলামের পিতা দাসউরা গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, জায়গা নেই তাই মেঝেতে আছি। কিন্তু এখানে শিশু ও প্রসূতিদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড থাকলে আমাদের এতো ভোগান্তি হতো না। তিনি বলেন, তিনদিন থেকে মেঝেতে আছি, এরমধ্যে শয্যা খালি হলেও আমাদের ভাগ্যে সেসব জুটে না।
বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) মোয়াজ্জেম আলী খান বলেন, বায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে কিছু কিছু রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। এ সময় হাসপাতালের নির্ধারীত শয্যার চেয়ে দ্বিগুণ রোগীকে আমাদের সেবা দিতে হয়। তিনি বলেন, আমাদের পুরুষ ও মহিলা এ দুইটি পৃথক ওয়ার্ডে ৫০টি শয্যা রয়েছে। রোগীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের পুরাতন কিছু শয্যা দিয়ে তৃতীয় তলায় স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
হাসপাতালে রোগীদের স্বজনদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি আরোও বলেন, এরকম কোন কিছু ঘটে থাকলে আমি জানতাম। এ নিয়ে আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি।