বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর থেকে :
তাহিরপুরে রক্তি নদীর ব্রীজের নীচ দিয়ে যাদুকাটা নদী হতে বালি পাথর পরিবহনে বাল্কহেড, স্টিল বডি নৌকার অনিয়ন্ত্রিত যাতায়াত। নদী দিয়ে বালি পাথর পরিবহনের সময় ব্রীজের পিলারের সহিত প্রায়ই সজোরে ধাক্কা লাগছে বাল্ক হেড কিংবা ছোট-বড় মাঝারি স্টিল বডি নৌকা। আর প্রতিদিন এ নদীপথে হাজারে নৌযান যাতায়াতের কারণে দিন দিন হুমখির মুখে পড়ছে তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের আনোয়ারপুর রক্তি নদীর ব্রীজটি।
যে কোন সময় ববালু কিংবা পাথর বোঝাই ভর্তি বাল্কহেড নৌকার আঘাতে ভেঙ্গে যেতে পারে আনোয়ারপুর ব্রীজ। সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সাথে পিছিয়ে পরতে পারে উপজেলা কেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এমনটা যেন না হয় এ চিন্তা থেকেই ব্রীজের নীচ দিয়ে বালি পাথর পরিবহনে বাল্ক হেড নৌকা যাতায়াত বন্ধের দাবীতে গত ১৬-১০-১৭ অক্টোবর আমরা নাগরিক বাসীর ব্যানারে আনোয়ারপুর বাজারে ব্রীজ রক্ষায় মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। পরবর্তীতে এলাকাবাসী তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরেও একটি স্মারকলিপিট প্রদান করেন।
যাদুকাটা নদী থেকে বালি পাথর পরিবহনে একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা নদী পথ। এ নদী পথে যুগ যুগ ধরে বালি পাথর পরিবহন করে আসছে শ্রমিক ব্যবাসায়ীরা। তবে পরিবহনে ধরন বদলেছে অনেক। এক সময় শুধু মাত্র কাটের নৌকা ও সামন্য কিছু কার্গো বালি পাথর পরিবহন করতে দেখা যেত এ নদীপথ দিয়ে। বর্তমানে কার্গো ও কাটের নৌকা কমে গেলেও বেড়েছে বাল্কহেড ও স্টিলবডি নৌকার।
পরিবহন কাজে নিয়োজিত নৌকাগুলো নিয়ন্ত্রন হীন ভাবে চলাচল করছে এ নদীপথে। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
গত ৩ মাস পূর্বে নদীতে পাহাড়ি ঢল থাকায় ব্রীজের নীচ দিয়ে যাতায়াতের সময় দু’টি বাল্কহেড নৌকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীর পূর্বদিকে একটি পিলার ও মাঝ নদীতে ব্রীজের একটি পিলারে সজোরে ধাক্কা লাগে এতে করে ব্রীজের পিলার সামন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপরদিকে চলতি বছরই ব্রীজের নীচ দিয়ে যাতাযাতের সময় পিলারের সহিত ধাক্কা লেগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩টি নৌকা নদীতে ডুবে যায়। একটি নৌকা উদ্ধার করা হলেও ২ টি নৌকা এখনো নদী গর্ভেই রয়েছে।
যাদুকাটা নদীতে বালু পাথর পরিবহন কাজে নিয়োজিত নৌযান ভাই ভাই পরিবহনের মালিক আনোয়ারপুর গ্রামের মনির হোসনে বলেন, পাহাড়ি ঢলের সময় নদীতে ¯্রােত বেশী থাকায় ব্রীজের নীচ দিয়ে নদীর বাকটি যাতায়াত করতে গিয়ে কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না বাল্কহেড কিংবা স্টিলবডি নৌযানের মাঝিরা।
২০০৫ সাল থেকে ব্রীজের কাজ শুরু হয়। ২০১০ সালে উদ্বোধন করা হয় এই ব্রীজটি। ব্রীজটি মূলভাগে রয়েছে ৪টি পিলার ও দুপারে রয়েছে আর ২টি পিলার। নদীর ভেতর পিলারের দূরত্ব কম থাকায় প্রায়শই যাতায়াত করতে গিয়ে পিলারের সহিত ধাক্কা লাগছে নৌকার।
আমরা হাওরবাসী সংগঠনের সমন্বয়ক ফেরদৌস আলম বলেন, নিয়ন্ত্রণহীন বালু পাথর ভর্তি বাল্কহেড এর ধাক্কায় যেকেনো দিন বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে রক্তি নদীর উপর নির্মত ব্রীজটি। তাই আমরা ব্রীজটি রক্ষার দাবী মানববন্ধন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি স্মারকলিপি দিয়েছি।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, আলমগীর হোসেন বলেন, বালু পাথর বোঝাইকৃত বাল্কহেড নৌযান চলন্ত অবস্থায় ব্রীজের পিলারে ধাক্কা মারলে ব্রীজে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্নেন্দু দেব বলেন, আনোয়ারপুর বাজার সংলগ্ন স্থানে রক্তি নদীর উপর যেখানে ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে নদীটির বাক রয়েছে, বাকের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে, ব্রীজের নীচ দিয়ে বাল্কহেড চলাচল বন্ধের জন্য স্থানীয় নাগরিকদের কাছ থেকে একটি স্মারকলিপি পেয়েছি আমি সেটি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে প্রেরণ করেছি।