হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জে নৌকাডুবির ঘটনায় আরও দুই লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সকালে বানিয়াচং উপজেলার রাধানগর ও শাহপুর গ্রাম থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত লাশের একজন হলেন লাখাইর ইসলাম উদ্দিনের স্ত্রী আলিমা বেগম (৩২)। সে শাহপুর গ্রামে পিত্রালয়ে বেড়াতে যাচ্ছিল। অপরজন হলেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড়কান্দি গ্রামের জানু মিয়ার কন্যা অনামিকা (৭)। এ নিয়ে উদ্ধারকৃত লাশের সংখ্যা হল ৬টি। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ৫ জন।
হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি ইয়াছিনুল হক জানান, রবিবার ভোরে এলাকাবাসী লাশ দুটি পানিতে ভেসে থাকতে দেখে খবর দিলে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
এদিকে শনিবার সকালে আইনুল হক নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার করা হয় হবিগঞ্জ শহরের বাতিরপুর এলাকার বাসিন্দা অবলা সরকার (৩০), বানিয়াচং উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা শিশু মুক্তা রাণী দাশ (৪) ও কাশিপুর গ্রামের ফুলচান (৭০)।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার পৌর ঘাটলা থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে সুজাতপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা। নৌকাটিতে একশ’ বস্তা সিমেন্ট ছিল। যাত্রাপথে নদীতে বানের পানির স্রোত থাকায় নৌকাটি দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে নৌকাটি নদীর লম্বাবাগ পাথরছড়া এলাকায় গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পানিতে ডুবে যায়। অধিকাংশ যাত্রী সাঁতার কেটে নদীর পাড়ে উঠলেও বৃদ্ধ মহিলা ও শিশুরা পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। রাত ৯টার স্থানীয় লোকজন খোঁজাখুজির পর ৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। দুর্ঘটনার পর থেকে নৌকার মাঝি আইনাল হককেও খোঁজে পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে শুক্রবার ঢাকা থেকে ৪ সদস্যের একটি ডুবুরি দল হবিগঞ্জ আসে। দুপুরে তারা হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের নিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। বিকেল পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে কোন লাশ না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে চলে যায়।
পুলিশের তালিকায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড়কান্দি গ্রামের জানু মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (২৮), পুত্র জুম্মন মিয়া (৭ মাস), একই গ্রামের আলাই মিয়ার কন্যা নুরজাহান বেগম (৩০), ফান্দ্রাইল গ্রামের জালাল চৌধুরীর স্ত্রী আগুরা খাতুন (২৮) ও পুত্র আব্দুল রাকিব চৌধুরী (৪)।